সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর জন্য মাটি খোঁড়া হচ্ছিল। বেশ অনেকটা খোঁড়ার পরে হঠাৎ অদ্ভুত একটা গন্ধ ছড়াতে থাকে। যাঁরা কাজ করছিলেন, তাঁরা প্রথমে পাত্তা না দিলেও, কিছুক্ষণের মধ্যেই গন্ধ বাড়ছে দেখে সবার টনক নড়ে। গ্যাসজাতীয় কোনও কিছু বেরোচ্ছে দেখে সন্দেহ হওয়ায়, কয়েকজন আগুন জ্বালিয়ে পরখ করতে যান। ঠিক তখনই দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে পাম্প বসানোর পাইপের মুখ। চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। দ্রুতগতিতে বস্তা নিয়ে এসে পাইপের মুখ চাপা দিয়ে আগুন নেভানো হয়। শনিবার সকালে এমনই একটি ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমানের কালনার সমুদ্রগড়ের দক্ষিণবাটী গ্রামে।
ঘটনার খবর দেওয়া হয় নাদনঘাট থানায়। দ্রুত পুলিশ ও দমকল বাহিনী এসে পৌঁছয় এলাকায়। গ্যাসের কারণে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য ঘিরে দেওয়া হয়েছে গোটা এলাকা। কী কারণে এমন গ্যাস বেরোচ্ছে তা জানার জন্য খবর দেওয়া হয়েছে ওএনজিসি-কে।
স্থানীয় বাসিন্দা কুদ্দুস আলি শেখ জানান, পানীয় জলের জন্যই ওই পাম্প বসানোর কাজ চলছিল। ১৪০ ফুট গর্ত খোঁড়ার পরেই গ্যাস বেরোতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি। ভয়ে পাম্প বসানোর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে এই খবর ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে উৎসুকদের ভিড় জমে যায়। পুলিশ ও দমকল এসে সবাইকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
সমুদ্রগড় পঞ্চায়েতের প্রধান রঞ্জিত দেবনাথ জানান, বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ওই এলাকাটি পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সিল করে দেওয়া হয়েছে। ওএনজিসি কর্তৃপক্ষ এলাকায় এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে য়া নির্দেশ দেবে সেটাই করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অপূর্ব রতন ঘোষ জানিয়েছেন, অনেকসময় এই ধরনের জিনিস দেখা যায়। তিনি বলেন, খনিজ দ্রব্য যে সব এলাকায় পাওয়া যায় তার আশপাশে গর্ত খুঁড়লেই মিথাইন গ্যাস বেরিয়ে আসে। যেটি বায়ুর সংস্পর্শে এলে আগুন জ্বলে। তাঁর অনুমান, এক্ষেত্রে এমনটা হতে পারে। তবে পুরোটাই আপাতত তাঁর অনুমান বলেও জানিয়েছেন।