• মুকুলে ছেয়ে গেছে বাগান, এবছর কি কম দামে আম পাবেন আমজনতা?
    আজকাল | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: এবছর আম চাষিদের জন্য খুশির খবর। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকেই মুর্শিদাবাদ জেলায় আম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত লালগোলা, ভগবানগোলা, লালবাগ, ফরাক্কা-সহ আরও একাধিক ব্লকের হাজার হাজার আম গাছ নতুন মুকুলে ছেয়ে গিয়েছে। জেলার আম চাষিরা আশাবাদী, গাছে যত মুকুল এখন রয়েছে তার ৫০ -৬০ শতাংশে ফল ধরলে এবছর মুর্শিদাবাদ জেলায় রেকর্ড আমের ফলন হবে। তার ফলে কমতে পারে রাজ্যে আমের দাম। 

    ঐতিহাসিকেরা বলেন, মোগল নবাবদের সময়ে মুর্শিদাবাদ জেলার আমের বাগানগুলোতে প্রায় ২৫০টি বিভিন্ন প্রজাতির আম উৎপাদন হত। আম উৎপাদন এবং আমের গুণমান নিরীক্ষণের সঙ্গে জড়িতরা বলেন, মুর্শিদাবাদের আমের স্বাদ দেশ এবং রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে উৎপাদিত আমের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। মুর্শিদাবাদ জেলার আমকে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে উৎপাদিত আমের থেকে পৃথক করার জন্য নবাবরা একসময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চারা নিয়ে এসে 'গ্রাফটিং' পদ্ধতিতে নতুন প্রজাতির শঙ্কর আম গাছ তৈরি করেছিলেন। তবে এখনও মুর্শিদাবাদ জেলার কহিতুর, কালাপাহাড়, চন্দন কোষা, মোহনভোগ, নবাব পসন্দ-সহ আরও কয়েকটি বিলুপ্ত প্রজাতির আম মানুষের জিভে জল এনে দেয়।

    মুর্শিদাবাদ জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, জেলার প্রায় ২১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ১ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। জেলার মধ্যে সবথেকে বেশি আম উৎপাদন হয় জঙ্গিপুর মহাকুমা এবং লালবাগ মহকুমার বিভিন্ন আম বাগানে। পিয়ারুল শেখ নামে ফরাক্কার এক আম চাষি বলেন, 'এবছর জানুয়ারি মাসের শেষ থেকে আম গাছে প্রচুর সংখ্যায় মুকুল আসতে শুরু করেছে। দিন যত যাচ্ছে মুকুলের সংখ্যা তত বাড়ছে। আমরা আশা করছি আবহাওয়া অনুকুল থাকলে এবং গাছগুলো ঠিকমত পরিচর্যা পেলে গাছে মুকুল থেকে যাবে।' চাষিদের আশা, গাছে এখন যা মুকুল রয়েছে তার ৫০ -৬০ শতাংশ ফুলে যদি ফল ধরে তাহলে যে পরিমাণ আমের উৎপাদন হবে তা আগের সমস্ত রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।

    তবে আম চাষিদের আশঙ্কা, হঠাৎ করে কোনও কারণে কুয়াশার দাপট বা অসময়ে বেশি বৃষ্টি বা শিলাবৃষ্টি হলে মুকুল কিছুটা নষ্ট হতে পারে। তৌসিফ শেখ নামে ভগবানগোলার এক আম চাষি বলেন, 'গতবছর মুর্শিদাবাদ জেলায় আমের 'অফ সিজন' থাকায় আম উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছিল। আমরা আশাবাদী গত বছর রাজ্যে যে দামে মুর্শিদাবাদের আম বিক্রি হয়েছে তার থেকে এ বছর কম দামে বিক্রি হবে।'

    আম চাষিরা জানান, ইতিমধ্যে উদ্যানপালন দপ্তরের তরফে সমস্ত চাষিদের কাছে আম গাছে কতটা মাত্রায় কীটনাশক দিতে হবে এবং কীভাবে পরিচর্যা করতে হবে তা নিয়ে সচেতন করা হয়েছে। এখন এটাই দেখার মুর্শিদাবাদের আম কবে বাজারে আসে এবং তার দাম কী থাকে।
  • Link to this news (আজকাল)