• পার্টি গ্রামছাড়া, বাড়ছে না তরুণ সদস্য, কেরলের উদাহরণ টেনে সিপিএমকে তোপ কারাতের
    প্রতিদিন | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বঙ্গ সিপিএমে তরুণ প্রজন্মের কর্মীর সংখ‌্যা বাড়ছে না। আন্দোলনে ছাত্র-যুবদের জমায়েত হলেও পার্টির সদস‌্য সংখ্যায় মাছি তাড়ানোর মতো অবস্থা। রাজ‌্য সম্মেলনের রুদ্ধদ্বার হলে উদ্বোধনী ভাষণে এভাবেই বঙ্গ সিপিএমের সাংগঠনিক দুর্দশার চিত্র তুলে ধরলেন সিপিএমের কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত। বঙ্গের সাংগঠনিক দুর্বলতার জন্য কার্যত তোপ দাগলেন রাজ্যের বাম নেতাদের।

    শনিবার থেকে হুগলির ডানকুনিতে শুরু হয়েছে সিপিএমের ২৭তম রাজ‌্য সম্মেলন। চলবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সেখানেই পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির কো-অর্ডিনেটরের পর্যবেক্ষণ, পশ্চিমবঙ্গে পার্টির আন্দোলনে তারুণ‌্য আছে কিন্তু দলে তাদের সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। এটা উদ্বেগজনক। ৩১ বছরের কমবয়সি পার্টি সদস‌্য আরও বেশি চাই, এটা স্পষ্ট করে এ প্রসঙ্গে কেরলের উদাহরণ দিয়ে কারাত বলেছেন, কেরলে ২২ শতাংশ পার্টি সদস‌্যের বয়স ৩১ এর কম। বঙ্গ সিপিএম তরুণ প্রজন্মকে সামনে আনতে চেষ্টা করছে। গত রাজ‌্য সম্মেলনেও একাধিক তরুণ মুখকে সামনে আনা হয়েছে। কিন্তু তাতে পার্টির কোনও লাভ হয়নি। এদিন কারাতের ভাষণে সেটাই সামনে এসেছে।

    পাশাপাশি রাজ‌্য নেতৃত্বকে গ্রামে যাওয়ার বার্তা দেন কারাত। গ্রাম একসময় ছিল সিপিএমের শক্তিশালী ঘাঁটি। কিন্তু বহুদিন ধরেই বঙ্গ সিপিএম শহুরে পার্টি হয়ে গ্রাম-বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সিপিএম গ্রামের গরিব, খেটে-খাওয়া মানুষের পাশে নেই বলে অভিযোগ। এ প্রসঙ্গেও কারাত রাজ‌্য নেতাদের পার্টির অভিমুখ গ্রাম-বাংলার দিকে করতে হবে বলে জানিয়েছেন। গ্রাম-বাংলার মানুষের জন‌্য কাজ করার কথা বলেছেন। শ্রেণি আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন।

    এই সমাবেশেই রাজনৈতিক প্রতিবেদন পেশ করে সিপিএম রাজ‌্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘বামই বিকল্প’ তা জনমানসের মধ্যে তুলে ধরতে বড় কর্মসূচি শুরু করা হবে। প্রান্তিক ও গ্রামীণ গরিব মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়াতে হবে। সেলিমের বার্তা, সম্মেলনের পর তীব্র আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হবে দলের তরফে। একইসঙ্গে সিপিএম রাজ‌্য সম্পাদকের তাৎপর্যপূর্ণ আহ্বান, সময়ের উপযোগী পার্টি গড়ে তুলতে হবে। সেজন‌্য নতুন প্রজন্মের কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে নেতৃত্বে তুলে এনে পার্টিকে নিষ্ক্রিয়তামুক্ত করার সওয়াল করেছেন তিনি। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর পর এক দশক কেটে গেলেও সময়োপযোগী পার্টি গড়ে তুলতে ব‌্যর্থ আলিমুদ্দিন! রাজনৈতিক মহলের দাবি, এই ইঙ্গিত রাজ্য সম্মেলন কক্ষের ছবিতেই ধরা পড়েছে। যেখানে প্রতিনিধি আসনে পক্ককেশ ও কালো মাথার সমন্বয় থাকলেও, মঞ্চে দেখা গিয়েছে পক্ককেশ নেতাদের সেই চেনা ভিড়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)