• শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মর্জিমাফিক স্কুল বন্ধ! উত্তরের প্রত্যন্ত গ্রামে প্রধান শিক্ষককে শোকজের পথে প্রশাসন
    প্রতিদিন | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: এক-দু’জন নয়। ১৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে কেউ স্কুলেই এলেন না শনিবার। ফলে স্কুল ক্যাম্পাসে পৌঁছেও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে একজনও শিক্ষকের দেখা না মেলায় ক্লাস না করে নিরাশ হয়ে ফের বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হল প্রত্যন্ত গ্রামের খুদে ছাত্রছাত্রীরা। এদিন দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের সুরুন (১) পঞ্চায়েতের নাগর নদীপাড়ের গোড়াহার প্রাথমিক স্কুলের ঘটনা। অথচ স্কুলপাড়াতেই একাধিক শিক্ষক শিক্ষিকার বাড়ি। তবুও স্কুল সময় বেলা এগারোটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত কোন শিক্ষকেই ক্যাম্পাসে দেখা যায়নি। তবে মিড ডে মিলের পাঁচ রাঁধুনির দু’জন এসেও ফিরে যান।

    বিস্তীর্ণ স্কুল ক্যাম্পাস উন্মুক্ত। নদীপাড়ের একমাত্র সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এই প্রাথমিক স্কুলের যাত্রা শুরু হয় ১৯৪০ সালের জানুয়ারিতে। পাঁচিল ঘেরা স্কুলের অধিকাংশ ক্লাসঘরে পাটকাঠি আর খড়ের গাদার স্তুপ। ছাগল চড়ছে ক্যাম্পাসে। মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য শান বাঁধানো টেবিল ফাঁকা। তবে সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রের দাবি, স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪১০ জন। ১২ জন স্থায়ী শিক্ষক- শিক্ষিকা এবং পার্শ্বশিক্ষক একজন। স্কুল ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় সহশিক্ষক মেহবুব আলমের বাড়ি। অথচ তিনিও স্কুলে গরহাজির ছিলেন। এমনকী স্কুল ঘেঁষে আরেক শিক্ষিকা রকেয়া ম্যাডামের বাড়ি। তবুও গরহাজির স্কুলে। প্রধানশিক্ষকের বাড়ি রায়গঞ্জে।উ পস্থিত পড়ুয়াদের একজন আদুরি শীলের কথায়,”প্রায়ই স্কুলে ক্লাস হয় না।” তবে একসঙ্গে স্কুলের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার অনুপস্থিত থাকার অদ্ভুদ যুক্তি দেন গোড়াহার প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসরাফুল হক বলেন,”বারিওলঘাট হাই স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আছে সন্ধ্যায়য়। তাই আমাদের গোরাহাড় প্রাথমিক স্কুল বন্ধ রেখেছি।”

    তবে এব্যাপারে ইটাহারের বিডিও দিব্যেন্দু সরকার বলেন,”অন্য কোনও স্কুলের অনুষ্ঠানের জন্য কর্মদিবসে প্রাথমিক স্কুল বন্ধ রাখা সম্পূর্ণ বেআইনি। আমি সংশ্লিষ্ট এসআইকে বলেছি,প্রধান শিক্ষককে শো কজ করে স্কুল বন্ধের কারণ ব্যাখ্যা করতে। তারপর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) রজনী সুব্বা বলেন,”একই দিনে সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকার ছুটি নেওয়া যায় না।” তবে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরের একটি হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠা দিবসের জন্য গোড়াহার প্রাথমিক স্কুল বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় গ্রামবাসীরা। স্থানীয় প্রধান উষারানি দাস বলেন,”আমি এখন জানলাম,স্কুল বন্ধ। অবশ্যই প্রশাসনকে জানানো।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)