পাচার হওয়ার আগেই বহরমপুরের সাটুই থেকে উদ্ধার ৩টি গোরুভর্তি গাড়ি, ধৃত ১০
বর্তমান | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বিহার থেকে বীরভূমের সাঁইথিয়া। সেখান থেকে গবাদি পশুর হাট হয়ে মুর্শিদাবাদ সীমান্ত। এই রুটেই চলছে গোরু পাচার। প্রতি শনি ও রবিবার বীরভূম লাগোয়া এই জেলার কান্দি মহকুমা হয়ে গোরু ঢুকছে সীমান্ত এলাকায়। ছোট ছোট মালবাহী গাড়িতে ঠেসে গোরু ভরে নিয়ে আসা হচ্ছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার বহরমপুর থানার অন্তর্গত সাটুই চৌরিগাছা এলাকায় হানা দেয় পুলিস। তিনটি গোরুভর্তি গাড়ি উদ্ধার করা হয়। গাড়িগুলি থেকে মোট ৭০টি গোরু ও বাছুর উদ্ধার হয়েছে বলেই জানিয়েছে পুলিস। এই ঘটনায় মোট দশজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া গোরুগুলিকে বাজারপাড়া এলাকায় একটি খোঁয়াড়ে রাখা হয়েছে।
একটি গাড়িতে প্রায় ৪০টি বাছুর ঠেসে ভরে রাখা হয়েছিল। উদ্ধারের পর বেশ কিছু বাছুর অসুস্থ হয়ে যায়। অমানবিক ভাবে গোরুগুলিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বেলডাঙায়। সেখানে বিভিন্ন জায়গায় এগুলি বিক্রি করার পরিকল্পনা ছিল পাচারকারীদের।
গোরু নিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়ে যায় বেলডাঙার কাপাসডাঙার বাসিন্দা ইকবাল শেখ। সে বলে, গত দেড় বছর ধরে এভাবেই গোরু নিয়ে যাই আমরা। রাস্তায় টাকা দিতে হয় পুলিসকে। কান্দি থানার ডাক মাস্টারকে টাকা দিয়ে এই রাস্তায় ঢুকেছিলাম। তারপরেও পুলিস ধরে নিল। বীরভূম থেকে গোরু আনতে প্রায় আট দশ জায়গায় টাকা দিতে হয়।
অপর এক পাচারকারী বলেন, প্রতিটি থানায় মাসোহারার ব্যবস্থা করা আছে। কিন্তু হঠাৎ করে কেন ধরে নিল, জানি না। এক একটি মোড়ে প্রতি গাড়ি পিছু হাজার থেকে দেড় হাজার করে টাকা নেয় পুলিস। কান্দি মহকুমায় অধিকাংশ থানাকেও টাকা দিতে হয়।
বহরমপুর থানার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আমরা এদিন অভিযান চালিয়ে তিনটি গাড়ি আটক করে মোট ৭০টি গোরু উদ্ধার করেছি। দশজনকে গ্রেপ্তার করে মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
তবে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৩০টি গাড়িতে সাঁইথিয়া থেকে গোরু আসছিল মুর্শিদাবাদে। তার মধ্যে দু’টি গাড়ি পুলিস পাকড়াও করতেই বাকি গাড়িগুলি পালিয়ে যায়। পরে একটি গাড়িকে ধাওয়া করে নাগাল পায় পুলিস। বাকি গাড়িগুলি ভরতপুর হয়ে রেজিনগর হয়ে বেলডাঙায় দিকে চলে যায়। গোরু ভর্তি বাকি গাড়িগুলির খোঁজ করছে পুলিস।