সংবাদদাতা, বাগডোগরা: মাটিগাড়ায় বালাসনের নদীঘাট দীর্ঘদিন বন্ধ। বালি পাথর তুলতে না পারায় রুটিরুজি নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন নদী শ্রমিকরা। শনিবার নদীঘাট খোলার দাবিতে নদীর চরে হাজির হন কয়েকশ শ্রমিক। ঘাট চালুর দাবিতে সেখানেই বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
কয়েক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে এই নদীঘাটটি। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে এই নদী ঘাট খোলার আর্জি জানান শ্রমিকরা। নদীঘাট বন্ধ থাকায় কিছু কিছু পরিবারে হাড়ি চরছে না বলে কেঁদেই ফেললেন কয়েকজন শ্রমিক। কারণ মাটিগাড়া ব্লকের আঠারোখাই গ্রাম পঞ্চায়েতের তারাবাড়ি এলাকায় কয়েকহাজার পরিবারের সংসার চলে এই নদীর উপরই নির্ভর করেই। তবে দীর্ঘদিন ধরে নদী বন্ধ থাকায় সংসার চালানো তো দূরের কথা, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার টাকাও জোগাড় করতে পারছেন না তাঁরা। নদী থেকে বালি পাথর তুলতে না পারায় কালোবাজারি শুরু হয়েছে। এই নদী শ্রমিকদের পাশাপাশি নদী ঘাটের উপর নির্ভর করে চলছে রাজমিস্ত্রি থেকে ব্যবসায়ীদের পরিবারও। নদীঘাট বন্ধ থাকায় তাদের কাজেও প্রভাব পড়েছে।
এদিন সন্টু সিংহ নামের এক রাজমিস্ত্রি জানান, ৩০০টাকা হাজিরায় বাড়ি নির্মাণ শুরু করি। তবে নদীঘাট বন্ধ থাকায় বালি পাথরের যোগান মিলছে না। মিললেও চরা দামে কিনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। ফলে কাজ না পেয়ে ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় সংসার চালানো থেকে ঋণের কিস্তি মেটাতে সমস্যা হচ্ছে। নদী শ্রমিক স্বর্ণালি বর্মন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, বহুদিন ধরে সন্তানদের ভালোমন্দ কিছু খাওয়াতে পারিনি। ওদার মাংস খাওয়ার বায়না করে। এমনিতেই সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর অবস্থা। এদিকে কাজ না থাকায় পড়াশোনার খরচ উঠাতে পারছি না। নদী ঘাটে দাঁড়িয়ে তারা বর্মন, নৃপেন বর্মন এবং ফুলেন বর্মনের মতো শ্রমিকরা জানান, নদীঘাট বন্ধ থাকায় বাড়িতে রোজ রান্নার হাড়িও চড়ে না। বহু আবেদন নিবেদন সত্ত্বেও নদীঘাট খোলেনি।
শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে মাটিগাড়ার বিডিও বিশ্বজিৎ দাস জানান, নদীঘাট খোলার বিষয়ে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। খুব দ্রুত এই সমাধান হবে।