• বহিরাগতদের বীরভূমের মূলবাসী সাজিয়ে প্রকল্প ভেস্তে দেওয়ার উস্কানি বিজেপির
    বর্তমান | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দেউচা-পাচামি নিয়ে বিজেপির চক্রান্ত ফাঁস! বহিরাগতদের বীরভূমের ‘মূলবাসী’ সাজিয়ে প্রকল্প ভেস্তে দিতে চলছে গেরুয়া উস্কানি। ছবি ও তথ্য প্রমাণ হাজির করে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হল তৃণমূল।


    দেউচা পাচামি প্রকল্প নিয়ে প্রতিদিনই এক ধাপ করে এগচ্ছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছেন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনি হতে চলেছে এটি। আগামী ১০০ বছর বিদ্যুতের অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে না রাজ্যবাসীকে। তার সঙ্গে রয়েছে লক্ষাধিক কর্মসংস্থান।


    গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটি নিয়ে বাণিজ্য মহল থেকেও এসেছে রাজ্যের প্রতি প্রশংসাসূচক বার্তা। এমনকী বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনেও উঠে আসে দেউচা- পাচামির প্রসঙ্গ। 


    ঠিক এই অবস্থায় এই প্রকল্পটিকে বানচাল করতে বিজেপি উঠে পড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সপ্তাহে বিধানসভায় বীরভূম জেলার একদল মানুষকে নিয়ে আসেন প্রাক্তন সাংসদ তথা বর্তমান বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। বিরোধী দলনেতার সঙ্গে তাঁদের সাক্ষাৎ হয়। যেখানে বিজেপির তরফে বর্ণনা করা হয়েছিল, বীরভূমের দেউচা-পাচামির অধিবাসী মূলবাসী জনজাতিদের একটি প্রতিনিধি দল হিসেবে। তাঁরা একটি দাবিপত্র দিয়েছেন।


    কিন্তু ওই ঘটনার দু’দিনের মধ্যে শনিবার  তৃণমূল জানিয়ে দিল, ওই প্রতিনিধি দলের থাকা লোকজনরা আদপে বীরভূমের দেউচা পাচামির মাটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নন। তারা বহিরাগত। মূলবাসী সাজানো হয়েছিল মাত্র। 


    দেউচা পাচামি এলাকার ভূমিপুত্র তৃণমূলের রাজ্যসভার সংসদ সামিরুল ইসলাম বলেন, আমরা এলাকা থেকে সম্পূর্ণ খোঁজ খবর করার পর দেখেছি বহিরাগতদের নিয়ে এসে বিজেপি এই প্রকল্পটিকে ভেস্তে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। উত্তর ২৪ পরগনার দুজন বাসিন্দাকে দেউচা পাচামি এলাকার বলে দেখানো হয়েছে বিজেপির তরফে। যার থেকেই স্পষ্ট বিজেপি চায় এত বড় পর্যায়ের একটি উন্নয়নের প্রকল্পকে বানচাল করে দিতে। তৃণমূলের তদন্তে উঠে আসা অভিযোগ, দেউচা পাচামি  বীরভূমের মূলনিবাসী মানুষ বলে যাদের পরিচয় দিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা, তাঁরা আসলে উত্তর চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা। একজনের নাম বীরেন হাঁসদা। তাঁর বাড়ি আমডাঙা থানা ও আমডাঙা ব্লকের মড়িচা গ্রাম পঞ্চায়েতে। তিনি পেশায় স্কুল শিক্ষক। দ্বিতীয়জন, আনন্দ বেসরা। উত্তর চব্বিশ পরগনার বীজপুর থানার কাঁচরাপাড়া নিউ কলোনিতে বাড়ি। তৃণমূলের তরফে ছবি দেখিয়ে বলা হয়েছে, অর্জুন সিংয়ের পাশে মহিলাটি বীরেনের স্ত্রী। বীরেন হরবাটি পশরডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন, যেটা আমডাঙাতে অবস্থিত। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, বহিরাগতদের নিয়ে গিয়ে দেউচা-পাচামি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। বিজেপির চক্রান্ত সামনে এসেছে। যদিও তৃণমূলের এই অভিযোগ নিয়ে বিজেপি নেতা অর্জুন সিংয়ের বক্তব্য, ওই মানুষদের আদি বাড়ি বীরভূমের কোথায়, তাঁরা কোন সংগঠন করে, এসব তৃণমূল জানে না।
  • Link to this news (বর্তমান)