• এটিএম সুরক্ষায় গাইডলাইনের পরিকল্পনা ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরের
    এই সময় | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • কাস্টমার কেয়ার নম্বর বদলে দিয়ে এবং এটিএমের কার্ড–রিডার পোর্টের ভিতরে আঠালো টেপ লাগিয়ে দু’জন গ্রাহকের লক্ষাধিক টাকা তুলে নিয়েছে প্রতারকের দল। গত সপ্তাহে সার্ভে পার্কের ওই ঘটনায় এটিএমে ছিলেন না কোনও নিরাপত্তারক্ষী। একই কায়দায় প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে শিলিগুড়িতেও। এই পরিস্থিতিতে আর কোনও এটিএমকে যাতে টার্গেট করতে না পারে প্রতারকের দল, তা নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য। সে জন্যে এটিএমের সুরক্ষায় আনা হচ্ছে নতুন গাইডলাইন। এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে ক্রেতাসুরক্ষা ও উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তর। সে জন্যে ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছেন দপ্তরের আধিকারিকরা।

    কলকাতা পুলিশের অফিসারদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা। লালবাজারের অফিসারদের বক্তব্য, ব্যাঙ্কগুলির নামে এটিএম চলে ঠিকই। তবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন বেসরকারি এজেন্সিকে এটিএম চালানোর দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন। নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখে এজেন্সি। এজেন্সির তরফে যে পরিমাণ টাকা এটিএমে ভরা হয় তার বিমা করা থাকে। ফলে টাকা লুট হলেও বিমা সংস্থার কাছ থেকে এজেন্সিগুলি তা ফিরে পায়।

    কিন্তু টাকা ফিরে পেতে ভোগান্তি হয় গ্রাহকের। বিমা থাকার কারণেই এজেন্সিগুলি এটিএমে নিরাপত্তারক্ষী রাখার বিষয়ে উদাসীন বলে মত পুলিশের। শুধু তাই নয়, শুধু এটিএম কাউন্টারের ভিতরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো থাকে। বাইরে কোনও ক্যামেরা না থাকার ফলে তদন্তে এগোতেও অসুবিধা হয়। কারণ, টাকা লুট করতে দুষ্কৃতীরা এটিএমে হানা দিয়ে প্রথমেই সিসি ক্যামেরা ভেঙে দেয়। তা ছাড়া, সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক ভাবে হয় না। পুলিশের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই এটিএমের সুরক্ষায় তৈরি করা হচ্ছে গাইডলাইন।

    মূলত ফাঁকা জায়গায় যে–সব এটিএম রয়েছে সেখানে অবশ্যই নিরাপত্তারক্ষী রাখতে হবে বলে সম্ভাব্য গাইডলাইনে ভাবা হয়েছে। শুধু এটিএমের ভিতরে নয়, বাইরেও অন্তত দু’টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে। এটিএমের ভিতরে এবং বাইরে অবশ্যই টাঙিয়ে রাখতে হবে পুলিশ এবং ব্যাঙ্কের হেল্পলাইন নম্বর। আবার পুলিশকেও এটিএমগুলিতে বাড়াতে হবে নজরদারি।

    কোনও গ্রাহকের টাকা এটিএম কাউন্টার ব্যবহার করে তুলে নেওয়া হলে ব্যাঙ্ক এবং স্থানীয় থানাকে সহযোগিতা করতে হবে— এমনই বক্তব্য ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের। এক আধিকারিক বলেন, ‘মানুষ অনেক কষ্ট করে টাকা জমান। সেই টাকা দরকারে মেলে বলেই এটিএমের এত গুরুত্ব। এ জন্যে ব্যাঙ্ক সার্ভিস চার্জও কাটে। ফলে ব্যাঙ্কগুলিকে গ্রাহকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই হবে।’ ব্যাঙ্ককর্মীদের সংগঠন বেঙ্গল প্রভিনশিয়াল ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাজেন নাগর মনে করেন, ‘রক্ষী এবং পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকার সুযোগেই এটিএম ঘিরে অপরাধ বাড়ছে। প্রশাসন এ বিষয়ে কঠোর হলে অপরাধ কমবে বলেই বিশ্বাস।’

  • Link to this news (এই সময়)