• শীঘ্রই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন ২ ভাই, ট্যাংরাকাণ্ডে এখনও রহস্য
    আজ তক | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • খুব দ্রুতই হাসপাতাল ছাড়া পেতে পারেন ট্যাংরা কাণ্ডে জখম প্রসূন ও প্রণয় দে। আর তারপরেই আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। ঠিক কীভাবে পরিবারের তিন মহিলা সদস্যের মৃত্যু, কেন-ই বা তাঁরা রাস্তায় গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালালেন, সেই সূত্র মিলবে বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই হাসপাতালে দুই ভাইকে কিছুটা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। তবে তাতে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে না। সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, দুই ভাই তাঁদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও করে থাকতে পারে। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাঁদের বেশি সময় ধরে বা চাপ দিয়ে প্রশ্নও করা সম্ভব নয়। তাই সপ্তাহের শুরুতে দুই ভাই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই গ্রেফতার করে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে। আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে পুলিশ আধিকারিকরা।

    শনিবার রাতে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে জখম তিনজনের মধ্যে পরিবারের বড় ছেলে প্রণয় দে–কে এনআরএস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বুধবার ভোররাতে ইএম বাইপাসে মেট্রোর পিলারে ধাক্কা মারে প্রণয়দের গাড়ি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ভাই প্রসূন এবং প্রণয়ের ছেলে বছর সতেরোর প্রতীপ। দুর্ঘটনার পরে তাঁরা দাবি করেছিলেন, আত্মহত্যা করতে গাড়ি নিয়ে শহরের পথে বেরিয়েছিলেন। এখানেই তদন্তকারীরা ধন্দে রয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, আত্মঘাতী হওয়ার জন্য কেন এ ভাবে মেট্রোর পিলারে ধাক্কা মারতে গেলেন তাঁরা? তার আগে কেনই বা বিমানবন্দর হয়ে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেস–কোনা হয়ে ফের বাইপাসে ফেরত এলেন? মৃত্যু নিশ্চিত করতে অন্য পথও তো খোলা ছিল।

    তিনি বলেন, 'আমরা জানার চেষ্টা করছি যে স্বামীরা নিজেরাই তাদের স্ত্রী-মেয়েকে হত্যা করেছে নাকি পরিবারের বাইরের লোকেরাও এতে জড়িত।' এর আগে, উভয় অভিযুক্তই পুলিশের সামনে দাবি করেছিলেন যে তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আত্মহত্যার পরিকল্পনা ছিল। এর জন্য, ঘুমের ওষুধ পায়েসের মধ্যে মিশিয়ে তাকে খাওয়ানো হয়। কিন্তু ইতিমধ্যে অভিযুক্ত এবং একটি ছেলে বাড়ির বাইরে দুর্ঘটনার শিকার হয়। পুলিশ বলেছে যে তাদের কাছে মনে হচ্ছে তারা (ভাইরা) আমাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তারা কিছু লুকানোর চেষ্টা করছে। আমাদের তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। ফরেনসিক দল বাথরুম, ওয়াশবেসিন এবং যে কক্ষগুলিতে দুই মহিলা এবং মেয়েটির মৃতদেহ পাওয়া গেছে সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। পুলিশ বাড়িতে লাগানো সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করেছে। অপরাধ সংঘটনের আগে অপরাধীর কার্যকলাপ বোঝার জন্য ফুটেজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে।

    এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, মহিলা এবং নাবালিকার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে এটা স্পষ্টই যে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে। আগে বলা হয়েছিল এটি আত্মহত্যার ঘটনা। কিন্তু পরে জানা যায় যে, মহিলাদের হাতের শিরা কাটা ছিল। গলায় গভীর আঘাতের চিহ্ন ছিল। এতে জানা যায় যে আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, বিষক্রিয়ার কারণে নাবালিকাটি মারা গেছে। তিনজনই একই পরিবারের সদস্য ছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, 'হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি। শনিবার দুজনের একজনের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।' তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে হত্যার ধরণ প্রকাশ পেয়েছে, তবে এই হত্যাকাণ্ডে কতজন জড়িত এবং কেন এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।
  • Link to this news (আজ তক)