‘পিগি ব্যাঙ্কের সব টাকা বোনের’, বাবার মুখে রানাঘাটের অস্মিকার কথা শুনে ঘট ভাঙল ছোট্ট বর্ষা
প্রতিদিন | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শাহাজাদ হোসেন, ফরাক্কা: সোশাল মিডিয়ার দৌলতে রানাঘাটের অস্মিকা দাসের কথা কমবেশি সকলেই জানেন। বাবা-মায়ের কাছে খুদের কথা জেনে সাহায্যের হাত বাড়ালো মাত্র ছ’বছরের বর্ষা দাস। পিগি ব্যাঙ্কে জমানো সবটাকা ছোট্ট অস্মিকার চিকিৎসার জন্য তুলে দেওয়ার কথা বলে সে। সেই মতোই পদক্ষেপ করলেন দাস দম্পতি। ছোট্ট বর্ষার ঘটের টাকা তুলে দেওয়া হল অস্মিকার বাবা-মায়ের হাতে।
রানাঘাটের বাসিন্দা অস্মিকা দাস। স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (SMA) নামক বিরল রোগে আক্রান্ত ফুটফুটে শিশুটি। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ১৬ কোটি টাকা। যা মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে সংগ্রহ করা কার্যত অসম্ভব। হাতে সময় খুবই কম, তাই সোশাল মিডিয়ার সাহায্যে মেয়ের চিকিৎসার অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা করছেন তাঁর বাবা-মা। একটি ভিডিও মাধ্যমেই অস্মিকার কথা জানতে পারেন মুর্শিদাবাদের অন্যতম প্রকৃতিপ্রেমী সঞ্জীব দাস। সেকথা জানান স্ত্রীকে। সেই সময় তাঁদের পাশে খেলা করছিল ছয় বছরের কন্যা সন্তান, বর্ষা। অস্মিকার কথা শুনেই বর্ষা তার ছোট্ট পিগি ব্যাঙ্ক নিয়ে এসে বাবার হাতে তুলে দেয়। জানায়, ভাঁড়ের সব টাকায় সে দিতে চায় তাঁর ছোট্ট বোন অস্মিকাকে। এরপর নিজেই পিগি ব্যাঙ্কটি ভাঙে বর্ষা। দেখা যায় সেখানে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা রয়েছে।
রবিবার বিশিষ্ট অভিনেত্রী ও সমাজসেবী পায়েল মিঠাই সরকারের উপস্থিতিতে সঞ্জীব দাস, ওনার স্ত্রী ঝুমকি দাস ও কন্যা বর্ষা তাঁদের তরফে পাঁচ হাজার টাকা ও অন্যান্যদের থেকে সংগৃহীত পনেরো হাজার টাকা-সহ মোট কুড়ি হাজার টাকা তুলে দেয় অস্মিকার পরিবারের হাতে। এছাড়াও দেওয়া হয় বিভিন্ন ফল, দুধ ও অন্যান্য খাবার। শুধু তাই নয়, পায়েল মিঠাই সরকারের পক্ষ থেকে এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। ধারাবাহিক জগৎ থেকে এখনও কেউ সেইভাবে এগিয়ে আসেননি। এই প্রথম টেলিভশন জগৎ থেকে অভিনেত্রী পায়েল এগিয়ে এসেছেন। পায়েলের পাশাপাশি এদিন উপস্থিত ছিলেন বাচ্চা গ্যাংয়ের মা সুদিপা চট্টোপাধ্যায়, ট্রাস্টের অন্যান্য সদস্য উজির শেখ, বিশ্বজিৎ সাহা। সঞ্জীব দাস বলেন, “পায়েল উদার মনের মানুষ। ধারাবাহিক জগতের কাজকর্মের পাশাপাশি যেভাবে সমাজসেবামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন তা সত্যি প্রশংসনীয়।”