বিধানসভায় দাঁড়িয়ে কুম্ভকে কার্যত মৃত্যুকুম্ভ বলে উল্লেখ করেছিলেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর এনিয়ে বিজেপি একের পর এক প্রতিবাদ আন্দোলনে নেমেছিল। এবার কতজন তৃণমূল বিধায়ক কুম্ভে ডুব দিয়েছেন তার হিসেব দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, আমি নিজে ওখানে স্নান করেছি। তৃণমূলের তো ৫০জন এমএলএ ওখানে স্নান করেছেন। মুখ্য়মন্ত্রীর মৃত্যুকুম্ভ বলার পরে ক্যানিংয়ের এমএলএ স্নান করেছেন। উত্তরপাড়ার এমএলএ স্নান করেছেন শুনলাম। যারা এসব বলছেন তারা শুধুমাত্র ক্যামেরার সামনে আসার জন্য় এসব বলেন। তবে বিপদে পড়লে তারাই বলেন ভগবান আমায় রক্ষা করুন। সেই সঙ্গে তৃণমূলের নেতারা মহাকুম্ভে স্নান করে সোশ্য়াল মিডিয়ায় ছবি দেন বলেও দাবি করেছেন।
মমতার বক্তব্যের ৩ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো ক্লিপ সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই পুরো অংশটিজুড়ে এবারের মহাকুম্ভের অব্যবস্থা নিয়ে সরব হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী, মহাকুম্ভে পদপিষ্টের জেরে মৃত্যুর ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিরুদ্ধে দেহ লোপাটের মতো গুরুতর অভিযোগও তুলেছিলেন মমতা। এরপরই এনিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। তীব্র আপত্তি তোলে বিজেপি।
মমতা বলেছিলেন, 'মহাকুম্ভ আমি নাই বা বললাম, ওটা মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গিয়েছে! মৃত্যুকূপের মতো! আমি মহাকুম্ভকে সম্মান করি। আমি শ্রদ্ধা জানাই। পবিত্র গঙ্গা মাকে আমি সম্মান করি। কিন্তু, প্ল্যানিং না করে এত হাইপ তুলে, এত লোকের মৃত্যু! বললেন ৩০ জন। কথাটা কি সঠিক? কত জনকে ভাসিয়ে দিয়েছেন নদীতে? কত? হাজার হাজার!'
তিনি আরও বলেছিলেন, বড়লোক আর ভিআইপিদের জন্য লক্ষ টাকার ক্যাম্প। আর গরিব লোকেদের, সাধারণ লোকেদের জন্য লাইনে দাঁড়ান। ১৫ ঘণ্টা, ২০ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে যদি একটা মাদুরেও বসে, ২০০০ টাকা!'
তিনি বলেছিলেন 'এইসব সিরিয়াস প্রোগ্রামে এত হাইপ তুলতে নেই। ফার্স্ট দেখতে হয় ক্যাপাসিটি আছে কিনা। প্ল্যানিংটা ভালো করে করতে হয়।'
তবে তার জবাবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘মহাকুম্ভকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন মৃত্যুকুম্ভ। আপনি বলেছেন কুম্ভ মেলা টাকা রোজগার করার জন্য করা হয়েছে। এই মন্তব্যের খেসারত আপনাকে দিতে হবে।’
এদিকে বার বার মমতা এর আগে গঙ্গাসাগরের সঙ্গে মহাকুম্ভের তুলনা টেনেছেন। অর্থাৎ গঙ্গাসাগরে ভিড় নিয়ন্ত্রণে কতটা সফল বাংলার সরকার আর কতটা ব্যর্থ যোগী সরকার সেটারই তুলনা টেনে বার বার কটাক্ষ করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।