আগেই মৃত্যু হয়েছে বাবা, মা আর বোনের। ধানবাদের বেসরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিল সুদীপ সাহা। পুত্র, পুত্রবধূ এবং নাতনীকে হারিয়ে সুদীপই ছিল সুমিত্রা সাহার একমাত্র আশার আলো। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। রবিবার সন্ধ্যাতেই মৃত্যু হয়েছে ১৩ বছরের সুদীপের। সেই খবর পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা থানার নলপা গ্রামে আসতেই নতুন করে হাহাকার উঠেছে। গ্রামের বাসিন্দাদের আক্ষেপ, মহাকুম্ভে পুণ্যস্নান করার জন্য বেড়িয়ে একটা পরিবার পুরোপুরি শেষ হয়ে গেল। বংশের বাতিকে হারিয়ে শোকে মূর্ছা যাচ্ছেন সুমিত্রা সাহাও।
কুম্ভে যাওয়ার পথে শনিবার রাতে ধানবাদের রাজগঞ্জ থানা এলাকায় জাতীয় সড়কে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে নলপা গ্রামের প্রণব সাহা, তাঁর স্ত্রী শ্যামলী সাহা এবং বছর পাঁচের শিশুকন্যা অন্বেষার। ধানবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিল সুদীপ। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ এই খবর এসে পৌঁছায় নলপা গ্রামে। এই খবর পৌঁছনোর পরই হাহাকার করছেন পরিবার-পরিজন থেকে গ্রামবাসী সকলেই।
গড়বেতা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ জানিয়েছেন, ধানবাদে ছিলেন প্রণবের দাদা প্রহ্লাদ সাহা ছিলেন। তাঁর মারফতই দুঃসংবাদ এসে পৌঁছেছে। এই খবর পাওয়ার পরেই ওই সাহা পরিবারের কয়েকজন রওনা দিয়েছেন ধানবাদে। প্রণবের পরিবারের সবাই মারা গেলেও নলপা গ্রামের সাহা বাড়ির অন্য সদস্যদের পাশে তাঁরা থাকবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানিয়েছেন, ধানবাদে ময়নাতদন্ত হওয়ার পরে সোমবার সুদীপের দেহ নলপা গ্রামে নিয়ে আসা হবে। ওই পরিবারকে পুলিশ সব ধরনের সাহায্য করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে, প্রণবদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাঁদের অসহায়তার সুযোগ নিয়েছে ঝাড়খণ্ডের হাসপাতাল।
উল্লেখ্য, রবিবার সকালেই নলপা গ্রামে পৌঁছায় প্রণব, তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ের দেহ। এ দিনই গ্রামেই শেষকৃত্য করা হয়েছে তাঁদের। গ্রামবাসীদের আক্ষেপ, এই শোকের মধ্যেই আরও এক নাবালকের দেহ সৎকার করতে হবে তাঁদের।