• অস্মিকার চিকিৎসার জন্য নিজের জমানো ৬ হাজার টাকা দিল সাগরদিঘির খুদে বর্ষা
    বর্তমান | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: কতই বা বয়স তার। কী-ই বা বোঝে দায়িত্বের! তবু মোবাইলে গেম খেলতে খেলতে হঠাৎ রানাঘাটের অস্মিকা দাসের অসুস্থতার খবর দেখে ছোট্ট বর্ষা মাকে বলেছিল, ‘মা ওর অনেক টাকা লাগবে ডাক্তার দেখাতে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে আমার জমানো ৬ হাজার টাকা বোনটাকে দিয়ে দাও।’ নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে যেখানে প্রতিদিন লড়াই করতে হয় অভাবের সঙ্গে, সেখানে মাত্র ছ’ বছরের মেয়ের এমন কথা শুনে প্রথমে থতমতো খেয়ে গিয়েছিলেন মা ঝুমকি দাস। যদিও মেয়ের ‘আবদার’ পূরণে রবিবার সাত সকালে সুদূর মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থেকে বর্ষাকে নিয়ে নদীয়ার রানাঘাটে ছুটে আসেন তিনি। তুলে দেন ভাঁড়ে জমানো বর্ষার ৬ হাজার টাকাই। 


    স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি আক্রান্ত রানাঘাটের একরত্তি শিশু অস্মিকা দাসের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ১৬ কোটি টাকা। সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে মানুষ সাধ্যমতো সাহায্য করছেন। রবিবার  একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছোট পর্দার অভিনেত্রী পায়েল ‘মিঠাই’ সরকার এসেছিলেন অস্মিকার পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দিতে। তাদের সংস্থার পক্ষ থেকে মোট এক লক্ষ টাকার একটি চেক তুলে দেওয়া হয়। যেখানে অভিনেত্রী পায়েল সরকার বলেন, প্রায় ৮কোটি টাকার কাছাকাছি বাংলার মানুষ অস্মিকার জন্য দিয়েছে। আরও লোককে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করব। আমি আমাদের চলচ্চিত্র জগতের কলাকুশলী ও সহকর্মীদেরও একই আবেদন জানাব। 


    অভিনেত্রী পায়েল সরকার যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, তাদের হাতেই নিজের জমানো ৬ হাজার টাকা তুলে দিয়েছিল বর্ষা। জানা গিয়েছে, বর্ষা মুর্শিদাবাদের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। বাবা সঞ্জীব দাসের একটি মুদিখানার দোকান আছে এবং মা ঝুমকি গৃহবধূ। প্রতিদিন স্কুলের জন্য বাবা-মায়ের থেকেই সামান্য কিছু টাকা পায় বর্ষা। তার পুরোটা কোনওদিনই খরচ করতে হয় না তাকে। ফলে অতিরিক্ত টাকা জমে মাটির ছোট্ট লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে। মা ঝুমকি দাস বলেন, একদিন মোবাইলে গেম খেলছিল বর্ষা। নিজেই দেখতে পায় সেই বিজ্ঞাপন। তখন আমার কাছে এসে আবদার জুড়ে বসে, ওই টাকা ও অস্মিকার কাছে পৌঁছে দেবে। আমাদের খুব গর্ব হচ্ছে আমাদের মেয়ের এত বড় মন দেখে। এরপর আমাদের এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং অভিনেত্রী পায়েল সরকারের সূত্র ধরে আমরা রবিবার এখানে আসি। সামান্য হলেও আমরা যে অস্মিকাকে সাহায্য করতে পেরেছি এটাতেই ভালো লাগছে।
  • Link to this news (বর্তমান)