• জলপাইগুড়িতে সিমকার্ড জালিয়াতি কাণ্ডে ধৃত তিন
    বর্তমান | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: মোবাইলের সিম জালিয়াতি কাণ্ডে গ্রেপ্তার তিন। ধৃতদের নাম অর্ণব দত্ত, সুনীল প্রসাদ ও নরেন্দ্র ঠাকুর। মাল, নাগরাকাটা ও মেটেলি থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের। এরা প্রত্যেকেই মোবাইলের সিমকার্ড বিক্রেতা। কেউ মোবাইলের জন্য সিমকার্ড কিনতে এলে তাঁদের ভুল বুঝিয়ে একাধিকবার পস মেশিনের সাহায্যে বায়োমেট্রিক নিত এরা। প্রতিবার ফিঙ্গারপ্রিন্টে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে একটি করে সিম ইস্যু হতো। কিন্তু সেই ব্যক্তিকে তা জানিয়ে, তাকে একটি সিম দিয়ে বাকিগুলি নিজেদের কাছে রেখে দিত এরা। তারপর দরদামে রাজি হলে প্রি অ্যাক্টিভ সিমকার্ডগুলি বিক্রি করে দিত সাইবার প্রতারক চক্রের কাছে। পরবর্তীতে বেনামি ওইসব সিম মোবাইলে ভরে ফোন করে কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বসে চলত সাইবার ক্রাইম। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে ওটিপি জেনে নিয়ে অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দেওয়া হোক কিংবা ডিজিটাল অ্যারেস্ট, সবই চলত ওইসব ‘জাল’ সিম ব্যবহার করেই। 


    কেউ সাইবার প্রতারণার শিকার হলে ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে ১৯৩০ টোল নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারেন। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিস সূত্রে খবর, যেসব নম্বর থেকে ফোন করে প্রতারণা করা হয়েছে বলে গত একবছরে ওই পোর্টালে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে ১৭২টি সিম কার্ড ইস্যু হয়েছে জলপাইগুড়ি থেকে। ওইসব বেনামি সিম ব্যবহার করে গোটা দেশে বিভিন্ন সময়ে সাইবার প্রতারণা হয়েছে। ওই তথ্য হাতে আসার পরই কারা সেসব সিম বিক্রি করেছে, তার তদন্তে নেমে তিনজনকে পাকড়াও করেছে পুলিস। 


    জলপাইগুড়ির পুলিস সুপার খণ্ডবাহলে উমেশ গণপত বলেন, সিমকার্ড জালিয়াতি কাণ্ডে জেলাজুড়ে বিশেষ অভিযানে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চারটি মামলা রুজু হয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে ৩৫টি জাল সিমকার্ড, পস মেশিন ও বায়োমেট্রিক ডিভাইস উদ্ধার হয়েছে। 


    জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিস সুপার (হেড কোয়ার্টার) শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, আমরা যে ১৭২টি সিমের উপর নজরদারি চালাচ্ছিলাম, সেগুলির বেশিরভাগই বিক্রি করেছে ধৃত এই তিনজন। এদের মধ্যে মালবাজার যে গ্রেপ্তার হয়েছে, সে মূল পান্ডা। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে আমরা এই চক্রে আরও কারা জড়িত, তা জানার চেষ্টা করছি। 


    এদিন জলপাইগুড়ি সাইবার থানায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অতিরিক্ত পুলিস সুপার বলেন, এখনও পর্যন্ত আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, ধৃতরা যে জাল সিমকার্ডগুলি বিক্রি করেছিল, তা ব্যবহার করে কলকাতা ও আশেপাশে কয়েকটি ভুয়ো কলসেন্টার চলছিল। সেখান থেকে ফোন করে সাইবার প্রতারণার চেষ্টা করা হতো।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)