• নির্বাচনে জিতলেও মন্ত্রিত্ব বা সরকারি পদ পাবেন না পার্থ, সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে জোর চর্চা তৃণমূলের অন্দরে
    বর্তমান | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • রাহুল চক্রবর্তী, কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচন এখনও বছরখানেক দেরি। তবে রাজনৈতিক দলগুলির অন্দরে এখন থেকে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। কারা টিকিট পাবেন, কাদের দল এবার আর টিকিট দেবে না, জিতে এলে মন্ত্রিত্ব নাকি কোনও সরকারি কমিটির শীর্ষপদ মিলবে—এসব নিয়ে রাজ্যের শাসক দলের অন্দরে জল্পনা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে নিয়োগ দুর্নীতি, রেশন দুর্নীতি ইত্যাদি অভিযোগে দীর্ঘদিন জেলবন্দি থাকা একের পর এক নেতার জামিন মিলছে। ফলে তাঁদের ভবিষ্যৎ ও রাজনীতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি চর্চা চলছে। সেই সূত্রেই এসে পড়ছে আরেক জেলবন্দি প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বা বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা, মানিক ভট্টাচার্যরা জামিনে মুক্ত হলেও পার্থ এখনও জেলেই আছেন। তাঁকে বিধানসভায় প্রার্থী করা হবে কি না, তা নিয়ে জোর চর্চা তৃণমূলের অন্দরে। প্রার্থী হয়ে জিতে এলে কি তিনি ফিরে পেতে পারেন মন্ত্রিত্ব? এ প্রসঙ্গও উঠছে। আর সেখানেই সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় উল্লেখ করে তৃণমূল নেতাদের মূল্যায়ন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় আর কোনও সরকারি পদ পাবেন না।  ফলে তাঁর মন্ত্রী হওয়া কার্যত অসম্ভব।


    একদা তৃণমূলের ‘ওজনদার’ নেতাদের মধ্যে সর্বাগ্রে আসত পার্থর নাম। দলের মহাসচিব ছিলেন তিনি। ২০২২ সালের ২২ জুলাই তাঁর বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সঙ্গে পার্থর ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ নগদ। তোলপাড় হয় রাজ্য-রাজনীতি। এরপর শিল্পমন্ত্রী এবং দলের মহাসচিব সহ সমস্ত পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। দল জানিয়ে দেয়, আইনি পথে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে ফিরতে হবে পার্থকে। কিন্তু দু’বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও জেলমুক্তি ঘটেনি তাঁর। আইনি লড়াই চলছে। এখানেই সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্লেখ করে পার্থর এক সময়ের সতীর্থরা বলছেন, তাঁর পক্ষে আর কোনও সরকারি পদ পাওয়া সম্ভব নয়। গত সপ্তাহে বিধানসভা অধিবেশনের ফাঁকে ঘরোয়া আড্ডায় তৃণমূলের এক নেতা জানান, সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ে স্পষ্ট বলা আছে, যতদিন মামলার ট্রায়াল চলবে, ততদিন তিনি কোনও সরকারি পদে থাকতে পারবেন না। ২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ‘১৮-জে’ নম্বর পয়েন্টে উল্লেখ করা হয়েছে বিষয়টি। তৃণমূলের কয়েকজন বিধায়কের ব্যাখ্যা, সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত মন্ত্রী কিংবা বিধানসভার কোনও স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান বা সরকারি কমিটির চেয়ারম্যান হতে পারবেন না পার্থ। গ্রেপ্তারির পর থেকে বিধানসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘর এখনও তালাবন্ধ। কবে সেই ঘর খুলবে, কেউ জানে না! এবার জানা গেল, তাঁর সরকারি পদ পাওয়ার পথও কার্যত বন্ধ হয়ে আছে সুপ্রিম-রায়ে। 
  • Link to this news (বর্তমান)