পুলিসে টিএ ২৭ বছর থমকে, দেওয়া হল দ্রুত বৃদ্ধির প্রস্তাব
বর্তমান | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কলকাতা বা দার্জিলিং ডিউটি করতে গেলে ভ্রমণ ভাতা (টিএ) মাত্র ১০৫ টাকা। জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছুঁলেও রাজ্য পুলিসের টিএ ২৭ বছর একই জায়গায় রয়ে গিয়েছে! পুলিস কর্মীদের এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ডিউটি করতে গিয়ে তাই খাওয়াদাওয়া সারতে হচ্ছে যে যার পকেটের টাকা খরচ করেই। এই নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে পুলিসের নিচুতলায়। তাঁদের টাকা বাড়ানোর জন্য রাজ্য পুলিসের ওয়েলফেয়ার কমিটির প্রস্তাব পেয়েই উদ্যোগী হচ্ছে পুলিস ডিরেক্টরেট। এই প্রস্তাবে ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য তারা নবান্নের দ্বারস্থ হয়েছে বলে খবর।
২০০৯ ও ২০১৯—দশবছরে রাজ্যে পে কমিশন হয়েছে দু’বার। তাতে পুলিস কর্মীদের বেতন বেড়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেখানে টিএ’র কোনও প্রসঙ্গ উল্লেখ না থাকায় এই খাতে একটি পয়সাও বাড়েনি রাজ্য পুলিসের। রাজ্য পুলিস সূত্রের খবর, ১৯৯৮ সালে বেতন কমিশন কার্যকর হওয়ার সময় টিএ বেড়েছিল। ওই শেষ। পরবর্তী ২৭ বছরে তার আর কোনোরকম পর্যালোচনা হয়নি। অথচ পুলিসের ডিউটির চাপ দ্বিগুণ হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে মানুষকে সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়ার স্বার্থে তৈরি হয়েছে একাধিক পুলিস জেলা। তদন্তের কাজে গতি এসেছে। তদন্তের প্রয়োজনে পুলিসকে বিভিন্ন জেলায় দৌড়ে বেড়াতে হচ্ছে। ভিন রাজ্যে অপরাধী ধরতে প্রায়ই বিভিন্ন জেলার পুলিস দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু ছুটছে। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ডিউটি করতে গেলে থাকার সমস্যা না-হলেও কনস্টেবল থেকে ইনসপেক্টর পদমযার্দার পুলিস কর্মীদের সারাদিনই বাইরে খেতে হয়। তাতে দৈনিক অন্তত ৩৫০-৪০০ টাকা খরচ হচ্ছে তাঁদের। আর বাইরের রাজ্যে গেলে দৈনিক থাকা-খাওয়ার খরচ পড়ছে দেড় থেকে দু’হাজার টাকা!
রাজ্য পুলিসের তথ্য বলছে, কলকাতা ও দার্জিলিং জেলার জন্য পুলিস কর্মীদের টিএ’র পরিমাণ ১০৫ থেকে ২৬০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। অন্য জেলার ক্ষেত্রে তার পরিমাণ মাত্র ৫৫ টাকা থেকে ১৩৫ টাকার মধ্যে! এই অগ্নিমূল্যের বাজারে এই বরাদ্দ প্রহসনের মতোই। এই কারণে গাঁটের কড়ি খরচ করে অনেকেই বাইরে ডিউটি করতে যেতে চাইছেন না। পুলিস কর্মীদের নিচুতলার এই চাপা ক্ষোভ নিয়ে চিন্তায় কর্তৃপক্ষ। এটা আঁচ করেই স্টেট ওয়েলফেয়ার কমিটির তরফে টিএ বৃদ্ধির প্রস্তাব যায় পুলিস ডিরেক্টরেটে। তখন বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন পুলিস বিভাগের কর্তারা। যেহেতু এই সংক্রান্ত টাকা অর্থদপ্তর দিয়ে থাকে, তাই বিষয়টি নবান্নের গোচরে আনা হয়েছে, যাতে দ্রুত এর সুরাহা মেলে।