নাম নথিভুক্তির পরেও ধান বিক্রিতে অনীহা কৃষকদের, বিড়ম্বনায় প্রশাসন
বর্তমান | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ধান কেনা নিয়ে বেশ বিড়ম্বনায় পড়েছে জেলা প্রশাসন। কারণ যেসব কৃষক ধান বিক্রির জন্য সরকারি পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করেছেন, তাঁদের অনেকেই সরকারি জায়গায় ধান বিক্রি করছেন না। শুধু তাই নয়, জেলায় অধিকাংশ কৃষক এখনও নাম নথিভুক্তই করেননি। এর ফলে ধান কেনার সার্বিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত জেলায় মাত্র ৮৯ হাজার টন ধান কেনা হয়েছে। এদিকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার টন।
জানা গিয়েছে, এ বছর এখনও পর্যন্ত ৬৪ হাজার কৃষক সরকারি পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করেছেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে সেন্ট্রালাইজড প্রোকিওরমেন্ট সেন্টার বা সরকারি জায়গায় ধান বিক্রি করেছেন মাত্র ৩৪ হাজারের মতো। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি বেসরকারি কেন্দ্রে বা খোলাবাজারে ধান বিক্রি করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন কৃষকরা? জেলা খাদ্যবিভাগের কর্তাদের দাবি, বাইরে বিক্রি করলে খুব বেশি যে লাভ হবে কৃষকদের, এমনটা নয়। কিন্তু সরকারি জায়গায় বিক্রি করার ক্ষেত্রে কৃষকদের গাড়ি ভাড়া অনেক পড়ে যাচ্ছে। সে কারণেই হয়তো এই ঝক্কি নিতে চাইছেন না অনেকে। তাই যেটুকু লাভ হচ্ছে, তাতেই খুশি হয়ে বাড়ির কাছে খোলাবাজারে ধান বিক্রি করে দিচ্ছে কৃষকদের একটি বড় অংশ।
জেলায় এখন কৃষকবন্ধুর সংখ্যা প্রায় ছ’ লক্ষ। তার মধ্যে ধানচাষ করেন এমন কৃষকের সংখ্যা আড়াই লক্ষ হবেই। অথচ, এবারে এক লক্ষ কৃষকও ধান বিক্রির জন্য নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেননি। কেন এমনটা হচ্ছে, তা নিয়ে বারে বারে পঞ্চায়েত স্তরে আলোচনা এবং বৈঠক করেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। কিন্তু তবুও বড় কোনও পরিবর্তন আসেনি। যদিও তাঁদের দাবি, গত বছর ধান বিক্রি করার জন্য ৫৫ হাজারের মতো কৃষক নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। এবার সেই সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে এবারে ধান বিক্রির গতিও কমে যাবে। ফলে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি কতটা যাওয়া যাবে, সেটাও একটা চিন্তার কারণ জেলার কর্তাদের কাছে।