• পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা, দালালদের ৭ হাজার দিলেই বাইকের হলুদ নম্বর প্লেট!
    এই সময় | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • পরিবহণ দপ্তরের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাত্রী সুরক্ষায় নিয়মবিধি মানতেই হবে অ্যাপ বাইক চালকদের। সাদা নম্বরপ্লেট ছেড়ে এ বার বাইকে হলুদ নম্বরপ্লেট (কমার্শিয়াল রেজিস্ট্রেশন) নিতে হবে। ডেডলাইন ৩১ মার্চ, ২০২৫। কিন্তু অভিযোগ, সাদা থেকে হলুদ নম্বরপ্লেটের আবেদন করতে গিয়ে চরম সমস্যা হচ্ছে। মাসের পর মাস কেটে গেলেও বেশ কয়েকটি রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিস (আরটিও) তাতে গুরুত্ব দিচ্ছে না। অথচ দালালদের ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা দিলেই দ্রুত কমার্শিয়াল নম্বরপ্লেট হয়ে যাচ্ছে। আবেদনকারীদের একাংশের দাবি, সংশ্লিষ্ট আরটিও এবং দালালদের যোগসাজশে এমন সমস্যা হচ্ছে। পরিবহণ দপ্তর কড়া পদক্ষেপ না করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

    অটো–ট্যাক্সির মতোই গণ পরিবহণের অন্যতম মাধ্যম এখন অ্যাপ বাইক। কম খরচে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছনোর কারণে কয়েক বছরের মধ্যে জনপ্রিয় হয়েছে বাইক পরিষেবা। এতদিন প্রাইভেট অর্থাৎ সাদা নম্বরপ্লেটেই অ্যাপ–বাইক চলতো। বোঝা যেত না, কারা অনুমতি নিয়ে যাত্রী পরিষেবা দিচ্ছেন, আর কারা এমনিই যাতায়াত করছেন। তাই পরিবহণ দপ্তরের তরফে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে অ্যাপ বাইক চালকদের হলুদ নম্বরপ্লেট লাগিয়েই যাত্রী পরিষেবা দিতে হবে। পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বাণিজ্যিক পরিবহণে যুক্ত বাইক বিধি না–মেনে পথে নামালে ফাইনও করা হবে। এই পেশাকে যাঁরা রুটি–রুজি হিসাবে বেছে নিয়েছেন, তাঁরা দ্রুত কমার্শিয়াল নম্বরপ্লেট তৈরি করতে আরটিও অফিসে প্রতিদিন দৌড়াচ্ছেন। অভিযোগ, তারই সুযোগ নিচ্ছেন কিছু সরকারি আধিকারিক এবং দালাল চক্র।

    পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, নম্বরপ্লেট কমার্শিয়ালে কনভার্ট করতে মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার খরচ। এক সপ্তাহের মধ্যেই তা হওয়ার কথা। অথচ অভিযোগ, আবেদন করার পরে রং বদলাতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। বাধ্য হয়েই দালালদের কাছে যেতে হচ্ছে বাইকারদের। তারা খুব কম সময়েই হলুদ নম্বরপ্লেট বের করে দিচ্ছেন। সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা, যাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বাইক কিনেছেন। অভিযোগ, আরটিও–তে গেলে সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ব্যাঙ্ক থেকে এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) জমা দিলে, তবেই মিলবে হলুদ নম্বরপ্লেট।

    সিটু পরিচালিত ওলা–উবের অপারেটর্স অ্যান্ড ড্রাইভারস ইউনিয়নের সহ সম্পাদক সোহাগ খানের অভিযোগ, ‘পরিবহণমন্ত্রী এবং সরকারি অফিসারেরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, লোন থাকলেও হলুদ নম্বরপ্লেট মিলবে। দ্রুত কমার্শিয়াল রেজিস্ট্রেশনও পাওয়া যাবে। কিন্তু, আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ভালো নয়। একাংশের অফিসার এবং দালালদের জন্য খেটে খাওয়া যুবকেরা সমস্যায় পড়ছেন।’ পরিবহণ দপ্তরের এক কর্তা বলেন, ‘যাতে দ্রুত কমার্শিয়াল নম্বর প্লেট পাওয়া যায়, তার জন্য প্রতিটি আরটিও–তে নির্দিষ্ট সময় স্লট করা আছে। ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যেই তা হওয়ার কথা। কারও বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানালে পদক্ষেপ করা হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)