• মেয়ের পরীক্ষা মিটলে সুইসাইড, প্ল্যান ছিল ট্যাংরার দে পরিবারের?
    আজ তক | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • Tangra Dey Family Suicide: বই-ই জগৎ ছিল প্রিয়ম্বদার। সেটা পড়াশোনারই হোক বা গল্পের। ট্যাংরার প্রাসাদোপম দে বাড়ির তিন তলার ঘরে তার বেশিরভাগ সময়টাই কাটত বইয়ে বুঁদ হয়ে। সেই কারণে মেয়ের পরীক্ষায় বাধা দিতে চাননি প্রণয় ও প্রসূন। পরীক্ষা মিটলে তবেই সপরিবারে আত্মহত্যা হবে, প্ল্যান করেছিলেন তাঁরা। পুলিশের কাছে এমনটাই দাবি দুই ভাইয়ের। আনন্দবাজার পত্রিকা-র প্রতিবেদনে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেটা সম্ভব হয়নি। পাওনাদারদের চাপ থেকে বাঁচতে পরীক্ষা শেষের আগেই সপরিবার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন, দাবি দে-ভাইদের।

    পুলিশ সূত্রে খবর, দে পরিবারের দুই সন্তানেরই পড়াশোনায় আগ্রহ ছিল। তাই তাদের অজান্তেই 'শেষ ইচ্ছা' রাখতে চেয়েছিলেন দুই ভাই। তবে বাজারে পাওনাদারদের চাপের ভয়ে আর অপেক্ষা করেননি। এমনটাই দাবি দুই ভাইয়ের।

    ১৭ ফেব্রুয়ারি, সোমবার পদার্থবিদ্যার পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরেছিল প্রিয়ম্বদা। এরপর বুধবার জীববিদ্যার পরীক্ষা ছিল। কিন্তু সোমবার রাতেই পায়েসে ঘুমের ওষুধ ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ মিশিয়ে মেয়েকে খাওয়ানো হয়। নিজেরাও খেয়ে নেন দে পরিবারের সদস্যরা। 

    পুলিশ সূত্রে খবর, ছ’জন পাওনাদারকে চেক দিয়েছিলেন দুই ভাই। মোট ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় এক কোটি টাকা। পাওনাদারদের চেক যে বাউন্স হবে, তা জানতেন দুই ভাই। সেক্ষেত্রে বাড়ি এসে ঝামেলার আশঙ্কা করছিলেন তাঁরা।

    গাড়ি দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে ভর্তি প্রণয় ও প্রসূনের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। প্রণয়ের হিপ-জয়েন্ট ভেঙে গিয়েছে। প্রসূনের সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও আত্মীয়-স্বজন তাঁদের হাসপাতালে দেখতে আসেননি।
    তবে এরই মাঝে পুলিশকে ভাবাচ্ছে ঘুমের ওষুধের বিষয়টি। কেন? কারণ, দুই ভাইয়েরই শরীরে সেভাবে ঘুমের ওষুধের প্রভাব মেলেনি। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলে পরীক্ষায় ঘুমের ওষুধের প্রভাব ধরা না-ও পড়তে পারে। 

    আপাতত প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, পূর্ব পরিকল্পনা করেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দুই ভাই। কারণ ঘটনার দিন বাড়ির পুরোহিত, গাড়ি ধোয়ার লোক— সবাইকে আসতে বারণ করা হয়েছিল। বাড়ির নিত্যপুজো বন্ধ ছিল।
    কিন্তু শুধুই কি ব্যবসায় লোকসান থেকে এত ঋণ? কার কাছে কত টাকা ধার? এই সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে পুলিশ। ব্যাঙ্কের লেনদেনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    উল্লেখ্য, সোমবারই হাসপাতাল থেকে ছুটি পেতে পারেন প্রসূন ও কিশোর। কিন্তু পরিবারের কেউ এগিয়ে না এলে নাবালক কিশোরকে হোমেই পাঠাতে হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
  • Link to this news (আজ তক)