মাসে গড়ে সাফাই ২৩ কোটি, সাইবার থানা ঢেলে সাজানোর নির্দেশ দিলেন পুলিশ কমিশনার
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সাইবার অপরাধের ঘটনা রোজ ঘটছে শহরের বুকে। গ্রামবাংলাতেও ঘটছে, তবে বেশি ঘটছে শহরে। আর তার জেরে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রযুক্তিকে ঢাল করে প্রতারকরা সাধারণ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লোপাট করে চলেছে। জাল বিছিয়ে দিয়েছে শহরে। আর সেটা না বুঝে তাতে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন বহু মানুষ। শহর কলকাতাতেই শুধু ২০২৪ সালে প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে ২৭৩ কোটি টাকা সাধারণ মানুষের খোয়া গিয়েছে। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে এই পরিসংখ্যা মিলেছে। সুতরাং সেটা ধরলে মাসে গড়ে সাফ হয়েছে প্রায় ২৩ কোটি টাকা। আর দিন হিসাবে ধরলে এক কোটি টাকা থেকে কিছু কম। এই টাকা এবার উদ্ধার করতে জোর দিলেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা।
এই টাকা খোয়া যাওয়ার একাধিক অভিযোগ জমা পড়েই চলেছে। কলকাতা পুলিশের মাসিক ক্রাইম কনফারেন্সে এই বিষয়টি নিয়েই জোরদার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তার পরও দেখা গিয়েছে, খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধার করার তদন্তে খুব একটা গতি আসেনি। আরও সক্রিয় হওয়ার প্রয়োজন ছিল। তাই কিছু কেস সমাধান করা গেলেও অধিকাংশ পড়েই আছে। তাই এবার লালবাজারের সাইবার থানাকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। সাইবার থানাকে আরও আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে গড়ে তুলতে চান তিনি। যাতে প্রতারিত মানুষদের দ্রুত সাহায্য করা যায়। এই বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন মনোজ ভার্মা বলে লালবাজার সূত্রে খবর। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এই সাইবার অপরাধের নানা চক্র রয়েছে। একটা চক্র গ্রামবাংলার দিকে সক্রিয়। আবার আর একটি চক্র কলকাতায় সক্রিয়। সেই চক্রের অধীনে আবার কয়েকটি চক্র আছে। এভাবেই কাজটি করা হচ্ছে বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। আর তাই মূল মাথা ধরতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। টাকা আদায় বড় আকারে হচ্ছে না। দু’জন ধরা পড়লেও তারা আসলে শাগরেদ। এই আবহে এবার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে যে, লালবাজারে থাকা সাইবার থানাকে ভেঙে ৬টি শাখা গঠন করা হবে। পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার নির্দেশ অনুযায়ী, সাইবার ক্রাইম পুলিশ স্টেশন, অর্গানাইজ সাইবার ক্রাইম সেকশন, সাইবার সিকিউরিটি–সাইবার সেফটি শাখা, সাইবার ফ্রড রিকভারি শাখা, সাইবার ফরেনসিক ল্যাব এবং সাইবার ক্রাইম কো–অর্ডিনেশন ও সাপোর্ট শাখা করা হবে।
ইতিমধ্যেই দ্রুত স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ তৈরি করতে বলা হয়েছে। আন্তঃরাজ্য এবং আন্তর্জাতিক সাইবার ক্রাইম গ্যাং নিয়ে কাজ করবে এই শাখা। কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা এবার প্রতারিত মানুষদের কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করার জন্য পৃথক সাইবার ফ্রড রিকভারি সেকশন গড়ে তুলছেন। তবে এই শাখাগুলিকে প্রচণ্ডভাবে সক্রিয় রাখতে মোট ২৫০ জন পুলিশকর্মী প্রয়োজন। এখন লালবাজার সাইবার থানায় ১০০ জনের মতো পুলিশ কর্মী আছেন। এখানে আরও বেশি করে প্রয়োজন—ইনসপেক্টর, এসআই, এএসআই, কনস্টেবল। দ্রুত কাজ শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।