হত্যা–আত্মহত্যার গোটা পরিকল্পনা পিছিয়ে দেয় ‘দে ব্রাদার্স’, নেপথ্যে কারণ কী?
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শহরের বুকে ঘটে যাওয়া ট্যাংরা কাণ্ডের তদন্ত যতই এগোচ্ছে ততই নানা নতুন এবং চাঞ্চল্যকর খবর বেরিয়ে আসছে। এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে ছিল বড় পরিকল্পনা। যার অনেকটা বাস্তবায়িত হলেও বাকিটা হয়নি। আর তার জেরেই বেরিয়ে আসছে নিত্যনতুন তথ্য। এখানে নাকি দে ব্রাদার্স সন্তানদের শেষ ইচ্ছে পূরণ করেছে। এই তথ্য আরও চমকে দিয়েছে তদন্তকারীদের। গোটা পরিবারকে খুন করে নিজেদের শেষ করার যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল সেখানে খানিক বদল আসে। সন্তানরা পরীক্ষা দিতে চায়। তার জন্য নিচ্ছিল প্রস্তুতি। সেই পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছাকে মেনে নিয়েই পিছিয়ে দেওয়া হয় পরিকল্পনা বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, সপরিবার আত্মহত্যার গোটা পরিকল্পনা ছকে ফেলেও দিনটি পিছিয়ে দেন ট্যাংরার দে পরিবারের দুই ভাই প্রণয় এবং প্রসূন। দুই ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, পড়াশোনা পছন্দ ছিল তাঁদের দুই সন্তানেরই। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালবাসত প্রিয়ংবদা। বাড়িতে থাকলে গল্পের বই পড়া থেকে পড়াশোনা চলত তাদের। পরীক্ষা সামনে চলে আসায় কদিন ধরেই জোরদার প্রস্তুতি নিচ্ছিল দুই ভাইবোন। এটা দেখার পরই দে ব্রাদার্স সিদ্ধান্ত নেয় খুন এবং আত্মহত্যা পরীক্ষার পর করা হবে। এটাকেই ছেলেমেয়েদের শেষ ইচ্ছা বলে পুলিশকে জানিয়েছেন প্রসূন এবং প্রণয়।
তবে সব পরীক্ষা দিতে পারেনি তারা। কারণ সেটা করতে গেলে আরও দেরি হয়ে যেত। পাওনাদারদের চাপ বাড়তে পারত। এই আশঙ্কা থেকেই প্রণয় এবং প্রসূন সন্তানদের পরীক্ষা শেষের অপেক্ষা করেননি। ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতেই পায়েসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মেয়েকে খাইয়ে দেন এবং নিজেরাও খেয়ে নেন। তারপরই সব শেষ। পুলিশ এই বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সেখান থেকে জানা যায়, দু’টি পরীক্ষা দিয়েছিল প্রিয়ংবদা। সোমবার পদার্থবিদ্যার পরীক্ষা দিয়েছিল। বুধবার জীববিদ্যার পরীক্ষাআর দেওয়া হয়নি। ৬জন পাওনাদারকে চেক দিয়েছিলেন প্রণয় এবং প্রসূন। কিন্তু পাওনাদারদের সেই চেকগুলি বাউন্স করে। আসলে এটাও পরিকল্পনার মধ্যেই ছিল। আর এটা ঘটলে যে ঝামেলা হবে সেটা আশঙ্কা করেছিলেন দুই ভাই। তাই সেভাবে পরিকল্পনা সাজানো হয়।
পথ দুর্ঘটনার পর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরিবারের কেউ প্রসূন–প্রণয়কে দেখতে আসেননি। এখন প্রণয়কে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে এন আর এস হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে রয়েছে পুলিশের নজরদারি। প্রসূনের রবিবার সিটি স্ক্যান হয়েছে। আজ, সোমবার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা প্রসূন এবং কিশোরকে ছেড়ে দিতে পারে বলে সূত্রের খবর। তবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুলিশ কথা বলছে বলে জানা গিয়েছে। এই দে বাড়িতে নিয়মিত পুজো করা স্থানীয় পুরোহিত পুলিশকে বলেছেন, ‘রোজ ওই বাড়িতে পুজো করতে যেতাম। গত সোমবার শেষবারের মতো ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। মঙ্গলবার খবর দেওয়া হয় আসতে হবে না। বুধবার সকালে আমি গোটা ঘটনার কথা জানতে পারি।’