‘উচ্চ কর্মক্ষমতা সম্পন্ন’ রাজ্যের তকমা পেল বাংলা, দিল পঞ্চায়েত মন্ত্রক
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সরকারি প্রকল্পের টাকা আটকে রেখে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছিল। বাংলার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তাই ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, স্বাস্থ্য মিশনের বরাদ্দ, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা, শিক্ষা মিশনের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অনিয়ম–দুর্নীতি তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছিল। নানা প্রকল্প খাতে বাংলার প্রাপ্য আটকে রেখেছে কেন্দ্র বলে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ। বঙ্গ–বিজেপি নেতারাও তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগই তুলে ধরেন বারবার। কিন্তু এবার স্বয়ং কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টই তা কার্যত খারিজ করে দিল নিজেদেরই সেই অভিযোগ। একাধিক রাজ্যে পঞ্চায়েতের কাজকর্মের উপর একটি মূল্যায়ন করে নয়া তকমা দিল কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রক।
কোন রাজ্য কেমন কাজ করছে তার উপর এই মূল্যায়ন করা হয়। আর ওই মূল্যায়নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে নয়া তকমা দিল কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রক। মূল্যায়ন করার নিরিখে বাংলাকে ‘হাই পারফর্মিং স্টেট’ অর্থাৎ উচ্চ কর্মক্ষমতা সম্পন্ন রাজ্যের তালিকায় জায়গা পেল। সুতরাং বাংলার কাজ যে সঠিক পথে এগিয়েছে এবং সাফল্য পেয়েছে সেটা প্রমাণ হয়ে যায়। তাই তো পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নে বাংলার কাজকর্মে সন্তুষ্ট মূল্যায়নকারী টিম। আর এই মূল্যায়নের মধ্য দিয়েই একের পর এক বিজেপি শাসিত রাজ্যকে পিছনে ফেলে এগিয়ে বাংলা। এই মূল্যায়নে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৫৬.৫২ নম্বর পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
এই গ্রামীণ কাজকর্মের ক্ষেত্রে মোট ৬টি বিষয়ের নিরিখে রাজ্যগুলির মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই ৬টি বিষয় হল—পঞ্চায়েতগুলি ঠিকঠাক পরিচালিত হচ্ছে কিনা, নিয়মিত অডিট হচ্ছে কিনা, টাকা খরচে স্বচ্ছতা, পঞ্চায়েত নির্বাচন শান্তিপূর্ণ কিনা, এসসি, এসটি এবং নারী সংরক্ষণের নিয়মগুলি মানা হচ্ছে কিনা। তার উপরই মূল্যায়ন করা হয়েছে। একইসঙ্গে আর্থিক বিষয়ের উপর মূল্যায়ন আর পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা বণ্টন এবং সেই টাকা কেমনভাবে খরচ করা হয়েছে তার তথ্য সংগ্রহ ও খোঁজখবর করা হয়। এমনকী পঞ্চায়েতগুলি নিজস্ব আয় বাড়াতে কতটা কাজ করেছে সেটাও খতিয়ে দেখা হয়। সবদিক বিচার করেই বাংলাকে ‘হাই পারফর্মিং স্টেট’ তকমা দেওয়া হয়েছে। যা ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বড় প্রাপ্তি।
বিজেপি নেতারা এই নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি। বরং তাঁদের কাছে এটা একটা চাপ হয়ে গিয়েছে। কারণ মূল্যায়নের রিপোর্ট অনুযায়ী, পঞ্চায়েতের পরিকাঠামো থেকে শুরু করে যোগাযোগ ব্যবস্থা, কর্মীসংখ্যা বিষয়ক বিভাগে রাজ্য পেয়েছে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৬৭.৭৬ নম্বর। দেশের সব রাজ্যে প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে এই মূল্যায়ন করা হয়েছে। তাছাড়া ‘হাই পারফর্মিং স্টেট’–এর তকমা বাংলা ছাড়া আরও পাঁচটি রাজ্য পেয়েছে। বাংলা অষ্টম স্থানে রয়েছে। তবে জনপ্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ নেওয়া, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ব্যবস্থা এবং পরিকাঠামো বিভাগেও বাংলা ৭০.৬৩ নম্বর পেয়ে বড় সাফল্য অর্জন করেছে।