• প্রযুক্তিগত জটিলতা, নিউ টাউনে প্যানিক বোতাম এখনও অথৈ জলে
    আনন্দবাজার | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • রাস্তায় বেরিয়ে সমস্যায় পড়লে বিপদঘণ্টি বাজিয়ে প্রশাসনের সাহায্য চাওয়ার সুযোগ এখনই পাচ্ছেন না নিউ টাউনের বাসিন্দারা। তথ্যপ্রযুক্তির জটিলতার কারণে আপাতত শিকেয় উঠেছে সেখানকার রাস্তায় বসানো বিপদঘণ্টি বা প্যানিক বোতাম চালুর বিষয়টি। যে কারণে এই মুহূর্তে নিউ টাউনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করতে জোর দেওয়া হচ্ছে সিসি ক্যামেরার উপরেই। আগামী তিন মাসে সেখানে ৩০০ সিসি ক্যামেরা বসানো হবে বলে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ) জানিয়েছে। এখন নিউ টাউনে প্রায় এক হাজার ক্যামেরা রয়েছে। সেই সঙ্গে এনকেডিএ-র দাবি, তথ্যপ্রযুক্তির জটিলতা কাটিয়ে প্যানিক বোতাম চালু করতে তারা সচেষ্ট।

    নিউ টাউনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে কেন্দ্রের স্মার্ট সিটি মিশন প্রকল্পের আওতায় ৪০০-রও বেশি প্যানিক বোতাম বসানো হয়েছিল ১ নম্বর অ্যাকশন এরিয়ায়। বাসিন্দারা জানান, বছর চারেক ধরে ওই সব প্যানিক বোতাম অকেজো হয়ে রয়েছে। বাসিন্দাদের সংগঠন, নিউ টাউন সিটিজেন্স ওয়েলফেয়ার ফ্রেটারনিটির সাধারণ সম্পাদক সমীর গুপ্ত বলেন, ‘‘এখানে রাস্তা ফাঁকা। সর্বত্র আলোরও জোর নেই। অতীতে রাস্তায় ছিনতাই হয়েছে। এ বার তো ধর্ষণ ও খুন হল। প্যানিক বোতাম চালু হলে তা নাগরিকদের জন্য ভাল হবে।’’

    এনকেডিএ সূত্রের খবর, সেই সময়ে স্মার্ট সিটি মিশন প্রকল্পের আওতায় ওই সব প্যানিক বোতাম বসানো হয়েছিল। কথা ছিল, ডঙ্গলের মাধ্যমে সেগুলি যুক্ত করা হবে। কিন্তু বাস্তবে সেই পদ্ধতি কাজ করেনি। যার ফলে ওই পরিষেবা আর চালু করা যায়নি। এ বার চেষ্টা চলছে ফাইবার অপটিক কেবলের সঙ্গে যুক্ত করে প্যানিক বোতাম চালু করার। কিন্তু সেই পদ্ধতি কী ভাবে এবং কত দিনে বাস্তবায়িত করা যাবে, তা স্পষ্ট করতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রশ্ন উঠছে, ব্যবহারের উপায় না জেনেই কেন ওই সব প্যানিক বোতাম রাস্তায় রাস্তায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল?

    নিউ টাউনে সম্প্রতি রাতে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুন করে এক ই-রিকশাচালক। সেই ঘটনার পরে বাসিন্দারাও চাইছেন, এই উপনগরীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হোক। এনকেডিএ জানিয়েছে, প্যানিক বাটন চালু হলে রাস্তায় সমস্যার সম্মুখীন হয়ে ওই বোতাম টিপলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কিংবা মহিলার ছবি সিসি ক্যামেরায় দেখতে পাবে পুলিশ। তাতে দ্রুত তাঁকে সাহায্য করা যাবে। দুষ্কৃতীর নাগালও পাওয়া যাবে দ্রুত। এক অর্থে এই ব্যবস্থায় কেউ বিপদে পড়লে তৎক্ষণাৎ তিনি পুলিশকে ডাকতে কিংবা সাহায্য চাইতে পারবেন। নয়তো সাধারণ ব্যবস্থায় তাঁকে ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে পুলিশের কাছে যেতে হবে।

    এক পদস্থ আধিকারিকের দাবি, কেন্দ্রীয় প্রকল্প হলেও এই সমস্যার সমাধান এনকেডিএ-কেই করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘সারা ভারতে কোথাও প্যানিক বোতাম চালু হয়নি। সর্বত্রই সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চলছে। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি যাতে পরিষেবাটি চালু করা যায়।’’

    স্মার্ট সিটি প্রকল্পে নিউ টাউনের রাস্তায় সাইকেল বে, শারীরচর্চার যন্ত্র বসানো হয়েছিল। সেগুলিও তেমন ভাবে জনজীবনের সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়া যায়নি।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)