• আলাদা সুবিধা নয়, সিগন্যালে আমজনতার সঙ্গে দাঁড়াতে হবে ভিআইপিদেরও, ঘোষণা মমতার
    প্রতিদিন | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • অভিরূপ দাস: ভিআইপি-র গাড়ি বলে আলাদা সুবিধা মিলবে না। যত বড় কর্তাব‌্যক্তি হন আর পাঁচজনের মতো সিগন্যালে দাঁড়াতে হবে মন্ত্রী-আমলা-সরকারী আধিকারিকদের। সোমবার ধনধান‌্য অডিটোরিয়ামে এমনটাই ঘোষণা করলেন মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়। এদিন মঞ্চে যখন বক্তব‌্য রাখছেন মুখ‌্যমন্ত্রী, পাশে বসে পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা, ডিজি রাজীব কুমার, মুখ‌্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বাস্থ‌্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। চিকিৎসকদের এক কনভেনশনে সোমবার বক্তব‌্য রাখতে গিয়ে মুখ‌্যমন্ত্রী বলেন, বাংলায় কোনও ভিআইপির জন‌্য গাড়ি বন্ধ থাকবে না।

    নিজের উদাহারণ টেনে মুখ‌্যমন্ত্রী বলেছেন, “আমি কখনও পুলিশকে বলি না, আমার গাড়ি গেলে একটাও গাড়ি আটকাবে। আমি পছন্দ করি ট্রাফিক জ‌্যামে দাঁড়িয়ে থাকতে।” মুখ‌্যমন্ত্রীর জনসংযোগ সর্বজনবিদিত। শহরে জেলায় যেখানেই তিনি যান ভিড় জমে যায়। মুখ‌্যমন্ত্রী পছন্দ করেন সেই ভিড়ের পায়ে-পায়ে চলতে। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের প্রতি নমস্কার জানান।

    বাম আমলে মুখ‌্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু-বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয় যাওয়ার সময় আটকে দেওয়া হত রাস্তা। আমজনতাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হত যতক্ষণ না ‘ভিআইপি’ পাস করছে। এদিন মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায় বলেছেন, “আর পাঁচজন সাধারণ মানুষ যদি ট্র‌্যাফিক সিগনালে দাঁড়াতে পারে, আমিও পারব। আমি কোনও হরিদাস নই। আমি পছন্দ করি সাধারণ মানুষের মতো চলতে।” মুখ‌্যমন্ত্রীর বক্তব‌্য, “কেউ কেউ ট্রাফিক সিগনালে অতি ব‌্যস্ততা দেখায়। আমার এটা ভাল লাগে না। আমি বলতে বলতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি। একজন ভিআইপি যাবে বলে অন‌্য গাড়ি বন্ধ করে দিয়ে সাধারণ মানুষকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা উচিৎ নয়। মনে রাখবেন সবারই কাজ থাকে।” তাঁর বক্তব‌্য, “যদি সবাই সিগনাল মানে তাহলে গ্রিন করিডর করার প্রয়োজন পড়ে না।” ডিজি রাজীব কুমার, পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাকে উদ্দেশ‌্য করে মুখ‌্যমন্ত্রী বলেছেন, “শুধু লক্ষ রাখবেন রাস্তার ক্রসিংগুলোয় যেন দুর্ঘটনা না ঘটে।”

    এদিন প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ‌্যমন্ত্রী। তারজন‌্য সমস্ত বিধায়ক-সাংসদদের তহবিলের টাকা দিতে অনুরোধ করেছেন। মুখ‌্যমন্ত্রীর কথায়,”বিধায়ক-সাংসদদেরও সামাজিক কর্তব‌্যবোধ আছে। এটা একসময় আমিও করেছি। আজ যে ট্রাফিক স্ট‌্যান্ডে গান হয়, দক্ষিণ কলকাতার একাধিক সুদৃশ‌্য বাস স্ট‌্যান্ড, স্কুলের বাইরে অভিভাবকদের বসার জায়গা, শ্মশানের বাইরে সৌন্দর্যায়ন-এগুলো আমি এমপি ল‌্যাডের টাকা থেকে করেছিলাম। এখন সরকারী ভাবে হয়।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)