• সুতন্দ্রাদের ধাওয়া করা সেই সাদা গাড়ির মালিকের খোঁজ, পানাগড়ের কাবারি পট্টির ব্যবসায়ী
    এই সময় | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর ঘটনায় নতুন তথ্য উঠে আসছে। রবিবার রাতে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে বর্ধমানের কাঁকসায় যে ঘটনা ঘটেছে, সেই ঘটনায় এখনও অবধি কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, যে সাদা রঙের গাড়িতে চড়ে ওই যুবকরা সুতন্দ্রাদের গাড়ি অনুসরণ করছিল, সেই গাড়ির মালিকের খোঁজ মিলেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধাওয়া করা ওই গাড়ি বাবলু যাদবের নামে নথিভুক্ত। দুর্গাপুর RTO থেকে তা রেজিস্টার্ড বলেও জানা গিয়েছে। বাবলু পানাগড়েরই বাসিন্দা। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, রবিবার রাতের ঘটনার সঙ্গে বাবলু যাদবের কি কোনও যোগ রয়েছে?

    পুলিশ সূত্রে খবর, বাবলু যাদব পানাগড়ের কাবারি পট্টি, যেখানে গাড়ির যন্ত্রাংশ কেনাবেচা হয়, সেখানকারই ব্যবসায়ী। সূত্রের খবর, ২০২১ সালে বাবলু ওই গাড়ি কেনেন। পুলিশ সূত্রে যা খবর, রবিবারের ঘটনার পর থেকে বাবলুর খোঁজ নেই। পরিবারের অন্য সদস্যদেরও খোঁজ নেই।

    পানাগড়ের ওই কাবারি পট্টিতে পুরোনো গাড়ি, গাড়ির যন্ত্রাংশ কেনাবেচা হয়। পুরোনো গাড়ি কাটা হয় এখানে। একটা গাড়িকে খুলে, অংশগুলি আলাদা করে, খুলে নেওয়া হয় যন্ত্রাংশও। যে যন্ত্রাংশগুলি ভালো, ফের তা সেকেন্ড হ্যান্ড হিসাবে বিক্রি করা হয়।

    এমনও অভিযোগ ওঠে, দেশের বিভিন্ন শহর থেকে চোরাই গাড়ি এনে এই কাবারি পট্টিতে বেচে দেওয়া হয়। কাঁকসা থানার আওতায় এই এলাকা। এমন নয় যে, এই ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স নেই। কিন্তু তার আড়ালেই কেউ হয়ত চোরাই গাড়ি এনে এখানে গ্যারাজ করে দিল। রাতারাতি খুলে ফেলা হলো গোটা গাড়ি। তবে এমনও হয়েছে, লরি বিক্রি করতে এসে হাতেনাতে কেউ ধরা পড়ে গিয়েছে। কাঁকসায় পানাগড় বাজারে পুরোনো জিটি রোডের ধারে এই কাবারি পট্টি। পুলিশ সূত্রে খবর, বাবলুও পুরোনো গাড়ির কাটার ব্যবসায় যুক্ত। তিনিও পুরোনো গাড়ির যন্ত্রাংশ কেনাবেচা করেন।

    অন্য দিকে গলসির ভাসাপুল এলাকার যে পেট্রোল পাম্প থেকে সুতন্দ্রাদের গাড়িতে রবিবার রাতে তেল ভরা হয়, সেখানকার একটি সিসিটিভি ফুটেজও পুলিশের হাতে এসেছে। গলসি থানার পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। মূলত গলসি থেকেই সুতন্দ্রাদের গাড়ি ফলো করা শুরু হয়।

    হুগলির চন্দননগর থেকে গয়া যাচ্ছিলেন সুতন্দ্রারা। তাঁর সহযাত্রীরা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা শুনিয়েছেন সংবাদমাধ্যমে। তাঁরা জানিয়েছেন, রাত তখন প্রায় ১২টা ১০। গলসি পেট্রোল পাম্প থেকে বেরিয়ে হাইওয়ে ধরে তাঁদের গাড়ি। একটু এগোতেই একটা সাদা গাড়ি তাঁদের সামনে দিয়ে বেরিয়ে যায়। এর পর হঠাৎ আবার ওই সাদা গাড়ি সুতন্দ্রাদের গাড়ির পিছনে চলে আসে বলে অভিযোগ তোলেন। কখনও বাঁ দিকে যাচ্ছে, অথচ ডান দিকের ইন্ডিকেটর দিচ্ছে। বেশ কিছুটা রাস্তা এ ভাবেই আগুপিছু চলতে থাকে দুই গাড়ি বলে অভিযোগ।

    যদিও এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী জানান, গাড়িটা বাবলু যাদবের। বাকিটা তাঁরা তদন্ত করে দেখছেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, ঘটনার সূত্রপাত দুই গাড়ির রেষারেষি থেকে। কোনও ইভটিজ়িং বা কটূক্তির অভিযোগ তাঁরা পাননি।

  • Link to this news (এই সময়)