‘ইভটিজ়ার’দের দৌরাত্ম্যে গাড়ি উল্টে বেঘোরে প্রাণ গিয়েছে চন্দননগরের তরুণীর। মেয়ের ওই পরিণতিতে স্বাভাবিক ভাবেই শোকে বিহ্বল মা। পরিজন, পাড়াপড়শিরা জানাচ্ছেন, প্রৌঢ়ার এমন অবস্থা হয়েছে যে, তিনি আত্মহত্যা করতে চাইছেন! পরিবার সূত্রে খবর, আসানসোলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তরুণীর মা। সেখানে আসানসোল জেলা হাসপাতালে মৃত তরুণীর দেহের ময়নাতদন্ত হবে বলে খবর পুলিশ সূত্রে।
রবিবার গভীর রাতে পানাগড়ের রাস্তায় গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে চন্দননগরের বাসিন্দা সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের। অভিযোগ, কয়েক জন মত্ত যুবক গাড়ি নিয়ে এসে তরুণীর গাড়িতে বার বার ধাক্কা দিতে থাকেন। তাঁদের হাত থেকে বাঁচতেই দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে উল্টে যায় তরুণীর গাড়ি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সুতন্দ্রার। গাড়িতে থাকা তাঁর দুই সহকর্মীও হাসপাতালে ভর্তি।
প্রতিবেশীরা জানান, বাড়িতে সুতন্দ্রার মৃত্যুর খবর আসামাত্রই চন্দননগর থানায় গিয়েছিলেন মৃতার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়। তার পর সেখান থেকেই আসানসোলের উদ্দেশে রওনা দেন। সুতন্দ্রা চন্দননগরের নাড়ুয়া রায় পাড়ায় বাসিন্দা। বাবা সুকান্ত চট্টোপাধ্যায় রেলের ঠিকাদার ছিলেন। বছরখানেক আগে তাঁরও মৃত্যু হয়। এক প্রতিবেশী জানান, বাবার ক্যানসারে মৃত্যুর পর সুতন্দ্রাই সংসারের হাল ধরেছিলেন। বাড়িতে তাঁর মা এবং ঠাকুমা-দিদিমা রয়েছেন। স্বামীর মৃত্যুর পর মেয়ের মুখের দিকে চেয়েই বাঁচছিলেন তনুশ্রী। এ বার মেয়ের মৃত্যুতে তিনি একেবারে ভেঙে পড়েছেন।
ওই প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল ওর মায়ের। মেয়েটাও মরে গেল। থানায় দেখা হয়েছিল সুতন্দ্রার মায়ের সঙ্গে। উনি কথা বলার অবস্থাতেও ছিলেন না। ভাঙা গলায় বললেন, ‘আমি সুইসাইড করতে চাই। এ বার আর বাঁচতে পারব না।’ মেয়েটা এ ভাবে চলে যাবে, ভাবতে পারছি না। খুব ভাল মেয়ে ছিল সুতন্দ্রা। আমরা চাই, ইভটিজ়ারদের শাস্তি হোক।’’
তরুণীর মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর বাড়িতে যান চন্দননগর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহিত নন্দী। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েটার বাবা সুকান্ত আমার সহপাঠী ছিল। এখনও বছর ঘোরেনি ওর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যেই মেয়ের মৃত্যু। মেনে নিতে পারছি না। যা শুনছি, সেটা যদি সত্যি হয়, তা হলে এই ধরনের দুষ্কৃতীদের ক্ষমা করা উচিত নয়। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত।’’