কেন ‘পায়েস’ খেয়েই পরপারে যাওয়ার ছক? ট্যাংরাকাণ্ডে চমকে দেওয়া তথ্য
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ট্যাংরা কাণ্ডের একেবারে পরতে পরতে রহস্য। চিত্তনিবাস। সামনেই স্বস্তিকা চিহ্ন। একই বাড়ি থেকে উদ্ধার তিনজনের দেহ। আবার সেই পরিবারের তিন সদস্য আহত গাড়ি দুর্ঘটনায়। তিনজনই আহয় হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
এদিকে একাধিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে ওই পরিবারের এক কিশোরীর পায়েস খাওয়ার পরে মৃত্যু হয়। এমনকী সেই পায়েস খেতে না চাওয়ায় তাকে মারধরও করা হয়েছিল। তার জেরেই তার কয়েকটি জায়গায় কালশিটে দাগ ছিল। সেটাই নাকি ঘুমের ওষুধ মেশানো পায়েস। এমনটাই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।
সেই পায়েসে আবার তুলসিপাতা দেওয়া হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে একাধিক রিপোর্টে।
তদন্তে নেমে একের পর এক মোড় আসছে ক্রমশ। প্রতিবেশীরা আগেই জানিয়েছিলেন ওই পরিবারের সদস্যরা রোজ সন্ধ্যায় উপরের ঠাকুর ঘরে পুজোপাঠ করতেন। কিন্তু ঘটনার সন্ধ্যাতে বাড়ি ছিল অন্ধকার। পুজোপাঠের আওয়াজ মেলেনি। তবে এক আত্মীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, বড়ভাই প্রণয় দে জ্যোতিষচর্চা করতেন। আর আর্থিক অনটন থেকে বাঁচতে তাদের কার্যত একটা পথকেই বেছে নিয়েছিলেন সেটা হল মৃত্যু। তবে মৃত্যু হলে যেন স্বর্গলাভ হয় সেটাও নাকি নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছিলেন। আর সেই বিশ্বাসের উপর ভর করেই পায়েসের আয়োজন।
আসলে পায়েস নাকি শুভ। সেই পায়েস খেয়েই পরপারে যেতে চেয়েছিলেন সকলে? কিন্তু তাতেও বাঁধে গোল। বর্তমান সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, দে পরিবারের বড় ছেলে পুলিশকে জানিয়েছেন, বাবার আমল থেকেই তাঁরা জ্যোতিষে বিশ্বাসী। তিনি নিজে অ্যাস্ট্রলজি শিখেছেন। বাস্তুশাস্ত্রেও দখল রয়েছে।
এদিকে সেই বিশ্বাস থেকেই পায়েসের কথা ভাবা হয়েছিল। পায়েস নাকি শুভ। আর সেই পায়েসের সঙ্গে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খেতে পারলেই খুলে যাবে স্বর্গের দরজা। বিষ নয়। সম্ভবত এমন কোনও বিশ্বাস থেকেই পায়েস খাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল দে পরিবার।
এমনকী সেই রাতে গাড়িতে কে কোথায় বসবে, কোন দিকে গাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে সেটাও নাকি স্থির করা হয়েছিল জ্যোতিষ মতে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। সফল হতে পারেননি প্রণয়। ঠিক যেভাবে জ্যোতিষের অবতারণা করেও আর্থিক অনটন থেকে মুক্ত হতে পারেনি পরিবার।
তবে পায়েসে আসলে কী মেশানো হয়েছিল সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে যত দিন যাচ্ছে ততই ট্যাংরা কাণ্ডে একের পর এক জট খুলছে। কিন্তু দুই ভাই পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ জেরার জন্য অপেক্ষা করছে পুলিশ।