খানাকুলে অকাল বন্যা, বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু রাজ্যের, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের থেকে ১০ টাকা দরে আলু কিনল নবান্ন
বর্তমান | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: বসন্তে অকাল ‘বন্যার’ পর অবশেষে খানাকুলের বলাইচকে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করল সেচদপ্তর। সোমবার ভাঙা অংশে বালির বস্তা ফেলে অস্থায়ী বাঁধ দেওয়ার কাজ জোর কদমে শুরু হয়। তাতে কিছুটা স্বস্তি মিললেও এদিনও এলাকার প্লাবন পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। চাষিরা এদিন আর মাঠে নেমে আলু তুলতে পারেননি। তাঁরা ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে হুগলি জেলা কৃষি বিপণন দপ্তরের তরফে ১০ টাকা কেজি দরে ৪০০ বস্তারও বেশি আলু ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের কাছ থেকে কেনা হয়েছে।
প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, চাষিদের কাছ থেকে কেনা আলুতে ইতিমধ্যেই পচন ধরতে শুরু করেছে। তাই ডুবে যাওয়া জমির আলু নষ্ট হয়ে যাবে। কৃষিদপ্তর বিমার মাধ্যমে চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।
হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মদনমোহন কোলে বলেন, বলাইচক এলাকার ৯৫ শতাংশ চাষি শস্যবিমার আওতায় আছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। যাঁরা বাদ গিয়েছেন তাঁদেরও বিমার আওতায় আনা হবে। এছাড়া ডুবে যাওয়া আলু কিনে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার মাঝ রাতে বলাইচক এলাকায় মুণ্ডেশ্বরী নদীর শাখা খালের বাঁধ ভেঙে যায়। ডিভিসির তরফে বোরো চাষের জন্য জল ছাড়া হয়েছিল। ভাঙা বাঁধ দিয়ে সেই জল ঢুকে কয়েকশো বিঘা আলু জমিকে ডুবিয়ে দেয়। কোমর সমান জলে নেমে চাষিরা জমি থেকে আলু তোলার চেষ্টা চালান। তবে এদিন জমিগুলিতে জলের পরিমাণ আরও বাড়ায় আর আলু তোলা সম্ভব হয়নি।
এলাকার চাষি সমীর সানা বলেন, প্রায় ৩০ প্যাকেট আলু জল থেকে তুলে প্রশাসনকে বিক্রি করেছি। কিন্তু, অনেক আলু এখনও জলের তলায় রয়েছে। সেগুলি আর উদ্ধার করা যায়নি। প্রশাসন যদি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে তাহলে ভালো। না হলে চরম ক্ষতির মুখে পড়ব। প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, বিক্রি করার মতো আলু জমি থেকে সংগ্রহ করা যায়নি। বাড়িতেই খাওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত আলুর জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। প্রশাসনের এক অধিকারিক বলেন, ডুবে যাওয়া জমির আলু কিনে চাঁপাডাঙায় গোডাউনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তা প্রক্রিয়াজাত করে সিঙ্গুরের সুফল বাংলার হাবে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে বিভিন্ন সুফল বাংলার স্টলে তা বিক্রি হবে। সোমবার রাতে ৩১৯ বস্তা আলু চাঁপাডাঙায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদিনও শতাধিক আলু প্যাকেট সেখানে পৌঁছয়। খানাকুল-২ বিডিও মধুমিতা ঘোষ বলেন, এদিন নতুন করে আর জল বাড়েনি। জল কিছুটা কমেছে। সেচদপ্তর বাঁধ মেরামতির প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। -নিজস্ব চিত্র