• মিড-ডে মিলের পাতে তিনদিন ডিম, বহরমপুরে প্রাথমিকে বাড়ল পড়ুয়াদের হাজিরা
    বর্তমান | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বহরমপুর: প্রাথমিকে মিড-ডে মিলে একদিনের পরিবর্তে তিনদিন করে ডিম দেওয়া শুরু হয়েছে। তারপরেই প্রতিটি স্কুলে পড়ুয়াদের হাজিরা প্রায় ১০০ শতাংশ ছুঁয়েছে। ফলে পড়ুয়াদের পুষ্টিযুক্ত খাদ্য মেলার পাশাপাশি মিলছে শিক্ষাও। কমছে স্কুল ছুটের সংখ্যা। ছাত্রছাত্রীদের পুষ্টির মাত্রা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী পোষণ কর্মসূচিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার জন্য মুর্শিদাবাদ জেলার ২৬টি ব্লক ও সাতটি পুরসভার প্রাথমিক পড়ুয়াদের জন্য প্রায় ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগামী ৪০ দিনের মধ্যে ১১ দিন বাড়তি ডিম দেওয়া হবে। পাশাপাশি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও স্কুল মনে করলে ডিমের বদলে মরশুমি ফলও পড়ুয়াদের দিতে পারে। বর্তমানে একটি ডিম সাড়ে পাঁচ থেকে ছ’টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বাড়তি ডিমের জন্য ৮ টাকা হিসেবে বরাদ্দ করা হয়েছে। শিক্ষকদের দাবি, বাড়তি টাকায় পড়ুয়াদের আরও পুষ্টিকর খাবার দেওয়া সম্ভব হবে।


    মুর্শিদাবাদ জেলায় ৩ হাজার ১৮২টি প্রাথমিক স্কুলসহ শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ৭ লক্ষ ৯৩ হাজার ৯ জন। এতদিন পড়ুয়াদের সপ্তাহের প্রতি বুধবার মিড-ডে মিলে ডিম দেওয়া হতো। আগামী ৪০ দিন বুধবারের সঙ্গে সোম ও শুক্রবার পড়ুয়াদের পাতে ডিম দেওয়া হবে। ফলে এখন থেকে সপ্তাহে তিনদিন পড়ুয়াদের পাতে ডিম পড়বে। প্রধানমন্ত্রী পোষণ যোজনায় তারজন্য ৬ কোটি ৯৭ লক্ষ ৮৪ হাজার ৫২৬ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। মিড-ডে মিলে ডিমের পরিমাণ বাড়ানোয় প্রতিটি স্কুলেই হুহু করে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।


    বহরমপুর সদর পশ্চিম চক্রের-১ নম্বর মণিন্দ্রনগর জিএসএফপি স্কুলের মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ২৭৪ জন। এতদিন দৈনিক গড় হাজিরা ছিল ১৯০ জন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিভাসচন্দ্র মণ্ডল বলেন, সপ্তাহে তিনদিন ডিম দিতে শুরু করায় হাজিরা বেড়ে ২৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে। ওই চক্রের ২ নম্বর তেজপাল লোহিয়া জিএসএফপি স্কুলের ৬৩ জন পড়ুয়ার মধ্যে ৫১ জন পড়ুয়া স্কুলে আসত। এখন সেই সংখ্যা ৬০ জনে পৌঁছেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিন্দ্য সিংহ বলেন, বরাদ্দ অপেক্ষা বাজারে কম দামে ডিম মিলছে। ফলে বেশকিছু টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। বাড়তি টাকায় মিড-ডে মিলের গুণমান বাড়াচ্ছি। বহরমপুর সদর পশ্চিম চক্রের কয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮০জন পড়ুয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০জন স্কুলে আসত। এখন হাজিরা খাতায় ৭১ জন উপস্থিত হচ্ছে। 


    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অপূর্ব নাথ বলেন, পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে সরকারের এই সিদ্ধান্ত খুবই ফলপ্রসূ হবে। ডিমের অনেক খাদ্যগুণ রয়েছে। যা পড়ুয়াদের পুষ্টির মাত্রা বাড়াবে। সপ্তাহে তিনদিন ডিম দেওয়ায় খুশি পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। তবে, সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার হাজিরার সংখ্যা হিসেবেই বাড়তি ডিমের বরাদ্দ মিলবে। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)