সিবিআই তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে শিয়ালদহ কোর্টে অসন্তোষ প্রকাশ অভয়ার মা-বাবার
বর্তমান | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দ্রুত সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেবে সিবিআই। সোমবার শিয়ালদহ আদালতে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে জমা দেওয়া রিপোর্টে এমনটাই দাবি করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তবে সিবিআই তদন্ত নিয়ে আদালতের সামনে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করেন অভয়ার বাবা-মা।
নির্যাতিতার বাবা মা আদালতে অভিযোগ করেন, সিবিআই তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে তাঁরা কিছুই জানতে পারছেন না। এই বিষয়ে তাঁদের অন্ধকারে রাখা হয়েছে। এরপরই কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে প্রগ্রেস রিপোর্ট জমা দিতে বলে আদালত। সোমবার আদালতে সেটি জমা পড়েছে। এদিন এজলাসে হাজির ছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। অভয়ার বাবা বিচারককে বলেন, কলকাতা পুলিস পাঁচদিন তদন্ত করেছিল। একদিন ডেকে পাঠিয়েছিল আমাদের। কীভাবে তদন্ত হচ্ছে, তদন্তে কী কী পাওয়া গিয়েছে, সমস্তটাই জানিয়েছিল তারা।
আর সিবিআই তদন্ত করছে সাতমাস ধরে। অভয়ার বাবার অভিযোগ, কিন্তু তাদের তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে কিছুই জানতে পারছেন না তাঁরা। সিবিআইয়ের লোকজন কোথায় আছেন তাও তাঁরা জানেন না। ১০ নভেম্বর তদন্তকারী অফিসার তাঁদের বাড়িতে সমন পৌঁছে দিয়েই চলে যান।
বিচারকের কাছে অভয়ার বাবার অনুযোগ, বিচার পর্বে আমাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বিচারক বলেন, আপনারা নিজেদের ব্রাত্য ভাববেন না। ওখানে কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এই ব্যাপারে সবটাই হয়েছে আদালতের নিয়ম মেনে। আপনারা ধৈর্য ধরুন, সবই জানতে পারবেন।
তখন অভয়ার বাবা বলেন, আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। বিচারক বলেন, কলকাতা পুলিস বা সিবিআই তদন্তের সবটা জানানো যায় না। প্রতিদিনের রিপোর্ট আপনাদের জানানো সম্ভব নয়। তবে নিশ্চিন্তে থাকুন, সবটাই জানতে পারবেন। আর কোনও অভিযোগ থাকলে আইনজীবী মারফত আদালতকে তা লিখিতভাবে আপনারা জানাতে পারবেন।
এরপর অভয়ার মা আদালতে জানান, তাঁর মেয়ে ‘অন ডিউটি ডাক্তার’ ছিলেন। তাহলে কেন এমন ঘটনা ঘটল, তাঁর মেয়ের সঙ্গে ঠিক কী হল—সেটাই তাঁরা জানতে চান। নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী অমর্ত্য দে বলেন, অভয়ার বাবা-মা দু’জনেই ভীষণ উদ্বেগের মধ্যে আছেন।
অন্যদিকে, সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের সিমকার্ড ফেরত চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এর বিরোধিতা করছেন তাঁরা। কারণ এই তদন্তে ওই সিমকার্ড একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, আদালতে তাঁদের অন্ধকারে রাখা হয়েছে। এর বিরোধিতা করে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, সমস্ত শুনানিতেই নির্যাতিতার পরিবার হাজির ছিল। এই মামলার স্টেটাস রিপোর্ট শীর্ষ আদালতে জমা পড়েছে। পরবর্তী শুনানি ২৮ মার্চ।