• অঙ্কে পাশ করানোর দাবি, উপাচার্য ঘেরাও যাদবপুরে
    বর্তমান | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সারারাত হস্টেল খোলা রাখা, ছাদের দরজা রাতেও না বন্ধ করার মতো একাধিক দাবিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা বৃহস্পতিবার রাতে উপাচার্যের ঘরে তালা মেরেছিলেন। ততোধিক অন্যায্য দাবিতে সোমবার উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত এবং অন্যান্য আধিকারিকদের দিনভর ঘেরাও করে রাখলেন ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির পড়ুয়ারা। এঁদের মধ্যে কয়েকজন আবার জাল মার্কশিট তৈরি করে সরকারি স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেছিলেন! সরকারি আধিকারিকরা যাচাই করার সময় সেই জালিয়াতি ধরে ফেলেন। ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ আসে। কর্তৃপক্ষকে চাপে রাখতে পাশ করানোর পাল্টা দাবিতে ঘেরাও শুরু করেছেন পড়ুয়ারা।


    তাঁদের দাবি, শতাধিক ছাত্রছাত্রী শুধুমাত্র অঙ্কে ফেল করেছেন। একটি বিষয়ে এতজনের ফেল করা স্বাভাবিক নয়। তাই তাঁদের দাবি, সবাই অঙ্কে পাশ করেছেন বলে নয়া মার্কশিট দিতে হবে। পরীক্ষা নিয়ামককে এই মর্মে নির্দেশ দিন উপাচার্য। ভাস্করবাবু বলেন, ‘এই দাবি শুধু আজব নয়, অনৈতিকও। আমি তাঁদের বলেছি, যখনই এই দাবি করেছ, তখনই যাদবপুরের ছাত্রছাত্রী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেওয়ার অধিকার হারিয়েছ। এই ৩০-৪০ জন যাদবপুরের ১২ হাজার ছাত্রছাত্রীর প্রতিনিধিত্ব করতেই পারে না।’ তিনি জানান, স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য ডাউনলোড করা মার্কশিটে জালিয়াতি করে সেটি সরকারি পোর্টালে আপলোড করে কিছু পড়ুয়া। আধিকারিকদের নজরে এলে বিশ্ববিদ্যালয়কে ওই পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু এভাবে পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবির সামনে কিছুতেই মাথা নোয়াবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপাচার্য।


    শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, অঙ্কে ফেলের বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। উপাচার্য নিজেও গণিত বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। উত্তরপত্রের রিভিউ-স্ক্রুটিনি করে যদি কোনও অসঙ্গতি বেরয়, তার সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামীতে প্রশ্নপত্র তৈরির সময়ও সচেতন থাকতে বলেছেন। তবে কেউ পাশ না করলে তাঁকে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দিতেই হবে। অথচ, এই পরীক্ষাতেই বসতে চাইছেন না ফেল করা পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, সরাসরি উত্তীর্ণ বলেই তাঁদের গণ্য করা হোক। এক নম্বর কনফারেন্স রুমে (সিআর১) ঘেরাও থাকা অবস্থায় ফোনে ভাস্করবাবু বলেন, ‘এই সমস্যাটি সম্পূর্ণ পৃথক বিষয়। সেটি পৃথকভাবে মোকাবিলা করা হবে। তাই বলে জালিয়াতি করতে গিয়ে ধরা পড়ে ঘেরাও করে পাশ করানোর দাবি মানা হবে না।’


    শিক্ষকদের বক্তব্য, ছাত্র নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক পোক্ত করতে ‘পপুলার পলিটিক্স’-এর আশ্রয় নেয় বিভিন্ন সংগঠন। সেই কারণেই এমন বিষয়গুলিও পিছন থেকে সমর্থন পেয়ে বড় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আখেরে সবারই ক্ষতি হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)