• নিউটাউনে ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে ১৭ দিনে চার্জশিট পুলিসের
    বর্তমান | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: নিউটাউনে ১৪ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মাত্র ১৭ দিনের মধ্যেই আদালতে চার্জশিট জমা দিল পুলিস।


    দ্রুত তদন্ত শেষ করে ধর্ষণ, খুন, পকসো সহ ১৩৭(২), ১৪০(১), ১০৩(১), ৬৫(১), ৬৬ বিএনএস এবং ৬ পকসো অ্যাক্টে ধৃত টোটো চালক সৌমিত্র রায়ের বিরুদ্ধে ন’পাতার চাজর্শিট জমা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আদালতের কাছে পুলিস প্রায় ৪০০ পাতার প্রমাণও জমা করেছে। এর মধ্যে মেডিক্যাল রিপোর্ট, ডিজিট্যাল এভিডেন্স, ফরেন্সিক নথি, জিও ম্যাপিং সহ একাধিক নথিপত্র রয়েছে। এমনকী, সিসি ক্যামেরায় দেখা যাওয়া যুবকই যে সৌমিত্র, তা প্রমাণ করার জন্য এই মামলায় গেট প্যাটার্ন টেকনোলজিও ব্যবহার করা হয়েছে। তাতে অভিযুক্তের হাঁটার ভঙ্গি প্রমাণ করা হয়েছে।


    সোমবার বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান সোনাওয়ানে কুলদীপ সুরেশ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তদন্তকারী অফিসার দ্রুত তদন্ত শেষ করেছেন। ১৭ দিনের মধ্যেই ধৃতের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা করা হয়েছে। দ্রুত ট্রায়ালের জন্যও আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এই মামলার বিশেষ সরকারি পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, চার্জশিট জমা হয়ে এদিন বারাসতের পকসো আদালতে মামলার চার্জফ্রেম হয়েছে। আগামী ১ মার্চ থেকে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।


    বাড়িতে বোনের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল ১৪ বছরের কিশোরীর। অভিমান করে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল সে। পরে বাড়ি ফেরার জন্য নিউটাউনের জগৎপুরের কাছে সে সৌমিত্র রায়ের টোটোয় উঠেছিল। কিন্তু সৌমিত্র তাকে বাড়ি না পৌঁছে দিয়ে নিউটাউনের একাধিক এলাকা ঘুরে নিয়ে যায় লোহাপুলে। সেখানে ধর্ষণ ও খুন করে। ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে অর্ধনগ্ন মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস পরদিনই ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে সৌমিত্রকে গ্রেপ্তার করে। জেরায় সে ধর্ষণ ও খুনের কথা কবুল করেছে। পুলিসকে সে জানিয়েছে, ধর্ষণের পর টোটোয় থাকা কাপড় দিয়ে সে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে। খুনের পরেও সে নির্যাতন করেছে। ময়নাতদন্ত ও বায়োলজিক্যাল নথিতে ধর্ষণের প্রমাণও মিলেছে।


    এই মামলার তদন্তে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিল বিধাননগর কমিশনারেট। দ্রুত তদন্ত শেষ করে চার্জশিট জমা করার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। তার আগে সমস্ত প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কাণ্ডে ড্রোন উড়িয়ে তদন্ত ও জিও ম্যাপিং করা হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, মেডিকো-লিগাল এভিডেন্স, ডিজিট্যাল এভিডেন্স, ফরেন্সিক এভিডেন্স, জি-লোকেশন বেসড এভিডেন্স জমা করা হয়েছে, যা এই মামলার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয়ত, ঘটনার পর সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধৃত টোটো চালকের হাঁটার দৃশ্য রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার জন্য ধৃতকে যখন আদালতে পেশ করা হচ্ছে, তখন তার হাঁটার ভঙ্গিমা রেকর্ড করা হয়েছে। গেট প্যাটার্ন টেকনোলজিতে প্রমাণ করা গিয়েছে, দু’টি হাঁটার ভঙ্গিমাই এক।
  • Link to this news (বর্তমান)