এই সময়: কোনও তদন্তকারী অফিসারের বা আইও–র তদন্তে গাফিলতির কারণে মামলার তদন্তভার নতুন কোনও অফিসার বা অন্য তদন্তকারী সংস্থাকে হস্তান্তর করতে হলে এ বার থেকে সাজার মুখে পড়তে হবে ওই আইও–কে। থানা থেকে সিআইডি–র হাতে একটি মামলার তদন্ত হস্তান্তরের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের স্পষ্ট অবস্থান, তদন্ত যদি হস্তান্তর করতে হয়, তা হলে আগে তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। বিচারপতি ঘোষের বক্তব্য, যাঁর বা যাঁদের গাফিলতি বা ত্রুটির জন্য মামলা হস্তান্তর করতে হলো, তাঁর বা তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয় না বলে তাঁদের মনোভাবের কোনও পরিবর্তন হয় না।
বিষয়টি নিয়ে আগেও বিচারপতি ঘোষ বিভিন্ন মামলায় সতর্ক করেছেন। তার মধ্যে একটি ক্ষেত্রে অভিযুক্ত অফিসারের বিরুদ্ধে বিচারপতি ঘোষ বিভাগীয় পদক্ষেপেরও সুপারিশ করেছেন। এ বার তিনি আরও স্পষ্ট ভাবে আদালতের অবস্থান জানিয়ে দিলেন। একই সঙ্গে হাইকোর্ট উদ্বিগ্ন, রাজ্য পুলিশে তদন্তে দক্ষ অফিসারের অভাব নিয়ে। একটি মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি ঘোষ এই ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের এডিজি আইনশৃঙ্খলার কাছে তদন্তে দক্ষ অফিসারদের তালিকা আগামী দিনে চাওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন। আগামী শুক্রবার ওই মামলার শুনানির দিন ঠিক হয়েছে।
বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে পাতা জোড়া বিজ্ঞাপনে দেশে–বিদেশে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার টোপ দিয়ে কোটি কোটি টাকা বাজার থেকে তুলে গা ঢাকা দেওয়ার অভিযোগে একটি পর্যটন সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সংস্থাটির অফিস ছিল উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড়ে। মামলায় জানানো হয়, অভিযোগ পাওয়ার পরেও টিটাগড় থানা এফআইআর করেনি। গত সপ্তাহে মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে। তখন রাজ্যের কৌঁসুলি জানান, টিটাগড় থানা তদন্ত শুরু করতে চায়, তাই একটা সুযোগ চায় তারা। মামলাকারীর আইনজীবী নীলাদ্রি শেখর ঘোষ সিআইডি তদন্ত চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তখন বিচারপতি ঘোষ মামলাকারীকে আশ্বস্ত করে জানান, যেহেতু পুলিশ এখন নিজেই তদন্ত করতে চাইছে, তাই একটা সুযোগ তিনি দিচ্ছেন। পরে যদি তদন্ত হস্তান্তর করার অবস্থা হয়, তখন তদন্ত কেবল সিআইডির হাতে যাবে না, গাফিলতির দায় নিতে হবে থানার তদন্তকারী অফিসারকেও।