এই সময়: নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের বিশেষ সম্মেলনের ঠিক দু’দিন আগে ইনস্টাগ্রামে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের এই পোস্ট নিয়ে জোড়াফুলের অন্দরে তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে।
ঠিক কী লিখেছেন অভিষেক?
ইনস্টাগ্রামে সোমবার ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের ছোট্ট বার্তা হলো, ‘যিনি লড়াই করতে চাইছেন, তিনি অবশ্যই প্রথমে এই লড়াইয়ের মূল্য চোকানোর কথা ভাববেন।’ অভিষেক প্রাচীন যুগের চিনা সমরবিদ সান জ়ু–র উক্তি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন চিনা মিথোলজি অনুযায়ী ‘আর্ট অব ওয়ার’ শিরোনামে প্রখ্যাত বই সান জ়ু–র লেখা। এই বইতে যুদ্ধের রণনীতি ও রণকৌশলের ব্যাখ্যা করেছেন এই চিনা সমরবিদ। যুদ্ধের দর্শন ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। সান জ়ু–র এই উক্তির মূল অর্থ হলো, যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে অবশ্যই এই যুদ্ধে কী ঝুঁকি রয়েছে তার বিবেচনা করা প্রয়োজন।
অভিষেকের এই ইনস্টা–স্টোরি তৃণমূলের অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। এই ইনস্টাগ্রাম পোস্টে অভিষেক কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা নিয়ে তৃণমূলের নেতারা প্রকাশ্যে কোনও ব্যাখ্যা দিতে চাননি। তবে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, এই পোস্টের মূল বার্তা যাঁদের বোঝা প্রয়োজন, তাঁরা ঠিকই বুঝেছেন। সকলেই পোস্ট দেখেছেন। যেখানে বার্তা যাওয়ার, সেখানে ঠিক চলে গিয়েছে।
অভিষেকের এই পোস্ট নিয়ে তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এ দিন বলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি পোস্ট করেছেন, এই পোস্ট সবাই দেখেছি। অভিষেক আমাদের নেতা, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি যদি কোনও পোস্ট করে থাকেন, তা নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ। এই নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’
ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে অভিষেকের ‘সেবাশ্রয়’ কর্মসূচি চলছে। ‘সেবাশ্রয়’ নিয়ে প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্ট করেন অভিষেক। কিন্তু সেই পোস্টগুলি যে ‘সেবাশ্রয়’ শিবির প্রসঙ্গে করা হয়েছে, তার স্পষ্ট উল্লেখ থাকে। সেই দিক থেকে এ দিনের ইনস্টাগ্রাম স্টোরি ভিন্ন আঙ্গিকের হতে পারে বলে তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য।
তৃণমূলের একাধিক নেতার পর্যবেক্ষণ, অভিষেকের এই পোস্ট পুরোপুরি রাজনৈতিক। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের বিশেষ সম্মেলনের সঙ্গে এই পোস্টের যোগসূত্র থাকলেও থাকতে পারে বলেও তাঁদের পর্যবেক্ষণ। নেতাজি ইন্ডোরে আগামী বৃহস্পতিবারের সম্মেলন নিয়ে এ দিন তৃণমূল ভবনে সুব্রত বক্সীর উপস্থিতিতে প্রস্তুতি বৈঠক হয়েছে।
নেতাজি ইন্ডোরে কোথায় বিধায়ক, সাংসদরা বসবেন, কোথায় সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব থাকবেন, কোথায় পুরসভার চেয়ারম্যান থেকে জেলা পরিষদের সভাধিপতিরা বসবেন, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন, সেই দিকে তৃণমূলের নেতারা তাকিয়ে রয়েছেন।
কুণালের কথায়, ‘সামনে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস হাতে হাত মিলিয়ে বিভিন্ন চক্রান্ত করছে। তার মোকাবিলা করতে হবে। উন্নয়নের সুফল নিবিড় জনসংযোগের মাধ্যমে মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া, বিরোধীদের কুৎসার মোকাবিলা করা— এই বিষয়ে নেত্রী তাঁর রূপরেখা দেবেন। সংগঠন কী ভাবে চলবে, নেত্রী তারও নির্দেশ দেবেন।’