• প্রয়াত বিশিষ্ট টেবিল টেনিস কোচ ভারতী ঘোষ, শোকস্তব্ধ ক্রীড়ামহল
    বর্তমান | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: টেবিল টেনিসের উপেক্ষিত ‘দ্রোণাচার্য’ ভারতী ঘোষ প্রয়াত। সোমবার দুপুরে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘বঙ্গরত্ন’ ভারতী ঘোষ (৮৩)। অকৃতদার ভারতীদেবী কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। 


    গত শুক্রবার শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। সব দেখে তিনি ভারতী ঘোষকে নার্সিংহোমে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল। সব চেষ্টাকে ব্যর্থ করে এদিন ভারতী ঘোষ মারা গেলেন। 


    ভারতীদেবীর মৃত্যুর খবর পেয়ে নার্সিংহোমে পৌঁছে যান মেয়র গৌতম দেব। শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও নার্সিংহোমে আসেন। মৃতদেহ নার্সিংহোম থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা, মরণোত্তর চক্ষুদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, সবকিছু যাতে মসৃণভাবে হয় তার ব্যবস্থা করেন মেয়র। গৌতম দেব বলেন, অভিভাবকহীন হয়ে পড়ল টেবিল টেনিস। মান্তু, গণেশ সহ ঝাঁকে ঝাঁকে তারকা খেলোয়াড় উপহার দিয়েছেন ভারতী ঘোষ। শিলিগুড়ি সহ বাংলার টেবিল টেনিসে ওঁর অবদান অনস্বীকার্য। 


    অর্জুন ও দু’বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় তাঁর হাতেই তৈরি। টেবল টেনিসের বিস্ময় প্রতিভা গণেশ কুণ্ডু তাঁর সেরা উপহার। এছাড়াও শ্রবণ প্রতিবন্ধী টেবিল টেনিসে তাঁর হাত ধরেই ওলিম্পিয়ান তৈরি হয়েছে। শর্মিষ্ঠা হালদার, পলি সাহা, প্রিয়ম চক্রবর্তী সহ ঝাঁকে ঝাঁকে কৃতী খেলোয়াড় তিনি গড়েছেন। এত কিছুর পরেও ভারতী ঘোষ দ্রোণাচার্য পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হননি। উপেক্ষিতই থেকে গিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের ক্রীড়া জগতে শোকের ছায়া নেমে আসে। 


    দ্রোণাচার্য পাননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে বঙ্গরত্ন পেয়ে তিনি সব দুঃখ ভুলে গিয়েছিলেন। তার পরপরই তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্রীড়াদপ্তরের দেওয়া ক্রীড়াগুরু সম্মান পেয়েছিলেন। বরাবরই তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া উপেক্ষিত ছেলেমেয়েদের তুলে এনেছেন। 


    এদিন সন্ধ্যায় দেশবন্ধুপাড়ার বাড়িতে নিয়ে আসা হয় ভারতী ঘোষের মরদেহ। বাড়ির পর তাঁর টেবল টেনিস তারকা তৈরির আঁতুড়ঘর দেশবন্ধু স্পোর্টিং ইউনিয়নে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভারতী ঘোষকে শেষ শ্রদ্ধা জানান মেয়র গৌতম দেব, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তী। ছিলেন ভারতীদেবীর হাতে তৈরি অগণিত খেলোয়াড়, দেশবন্ধু ক্লাবের সমর্থক কর্মকর্তার পাশাপাশি শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠক ও ক্রীড়া সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বিমান ধরতে না পারায় কলকাতা থেকে আসতে পারেননি গণেশ কুণ্ডু। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ দেশবন্ধু ক্লাব থেকে ভারতীদেবীর অন্তিম যাত্রা শুরু হয় কিরণচন্দ্র শ্মশান ঘাটের উদ্দেশ্যে। রাতে সেখানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)