আন্তর্জাতিক হুন্ডি চক্রের পান্ডা দুলাল মহন্ত গ্রেপ্তার
বর্তমান | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, বালুরঘাট: আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের টাকা লেনদেনের মাধ্যম হুন্ডি বা হাওয়ালা। সেই চক্রের মূল পান্ডা এবার পুলিসের জালে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম দুলাল মহন্ত। বাড়ি হিলি থানার ল’পাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের লালপুর এলাকায়। হিলি ও পতিরাম দুই থানার পুলিস যৌথ অভিযান চালিয়ে রবিবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হলে পুলিস ১০ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়েছিল। কিন্তু বিচারক পাঁচদিনের নির্দেশ দেন।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সামান্য মুড়ির ব্যবসা থেকে কয়েক বছরে ফুলেফেঁপে উঠছিল দুলালের সম্পত্তি। মাটির বাড়ি থেকে বিশাল বাড়ি, গাড়ি সহ জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয়েছিল আত্মীয়, প্রতিবেশীদের। বাসিন্দাদের মনে কৌতুহল ছিল, এত টাকার উৎস কী? তবে রবিবার রাতে হুন্ডির কারবার ও মাদক পাচার কাণ্ডে দুলাল গ্রেপ্তার হওয়ার পর আসল কথা জানতে পারলেন গ্রামবাসীরা। পতিরাম থানার ওসি সৎকার সাংবো বলেন, কয়েকজন মাদক পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় দুলাল মহন্তর নাম উঠে আসে। সে দুই দেশের মাদক পাচারকারীদের টাকা লেনদেনের মূল মাথা ছিল।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে,সম্প্রতি মাদক পাচার চক্রের ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে অন্যতম জাহাঙ্গীর মণ্ডলকে শনিবার পুলিস হিলির উত্তর জামালপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জানতে পারে,মাদকপাচার চক্রের পুরো টাকার লেনদেন করত দুলাল। অন্যান্য পাচারকারীদের সঙ্গেও তার দহরম মহরম ছিল। তাদের পাচারের টাকা হুন্ডির মাধ্যমে দিত দুলাল। এমনকি এই মাদক চক্রে দুলালের ভূমিকা অনেক বড় বলে জানা গিয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি সীমান্ত পাচারের স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত। এই সীমান্ত দিয়ে এপার থেকে যেমন গোরু, মাদকসহ একাধিক সামগ্রী ওপারে পাচার হয়ে থাকে। সেই পাচারের টাকা হিসেবে ওপারের হুন্ডি কারবারীরা এপারে সোনা পাঠায়। কয়েক কোটি টাকার সেই সোনা পৌঁছে যায় এপারের হুন্ডি ব্যবসায়ীদের কাছে। সোনা বিক্রি করে মাদকের টাকা পাচারকারীদের দিয়ে দেওয়া হয়। সেই কাজটাই করত দুলাল। ত্রিমোহিনী বাজারে তার একটি ছোট দোকান আছে। সেখান থেকেই চক্র চলে। এমনকি বাংলাদেশ থেকে আসা নাগরিকদের টাকা ভাঙিয়ে দেওয়ার কাজ করত দুলাল। সে সোনার কারবারের সঙ্গে জড়িত রয়েছে কি না, পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। (ছবি-দুলাল মহন্ত।)