নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: পড়ুয়াদের দীর্ঘদিনের সমস্যা অবশেষে মিটতে চলেছে। মার্চেই অনুষ্ঠিত হবে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে একথা জানান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ আট বছর সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়নি। এর জেরে কয়েকশো ছাত্রছাত্রী স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হলেও তাঁরা সার্টিফিকেট পাননি। উচ্চ শিক্ষায় ডিগ্রি অর্জন করেও প্রভিশনাল সার্টিফিকেট দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে তাঁদের। পড়ুয়ারা বারবার সেই সমস্যার কথা জানালেও সমাধান হয়নি এতদিন। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছিল, একজন চাকরির আবেদন করলেও প্রভিশনাল সার্টিফিকেট জমা দেওয়ায় তাঁর ফর্ম বাতিল করা হয়েছিল।
এদিন সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পড়ুয়াদের আশ্বাস দিয়ে মন্ত্রী বলেন, সমাবর্তন যাতে না হয়, তার জন্য এখানে প্রচুর চেষ্টা এবং চক্রান্ত চালানো হয়েছিল। কিন্তু আমি বলছি, সব বাধা অতিক্রম করে সমাবর্তন হবে। আশা করছি মার্চ মাসের মধ্যেই গৌড়বঙ্গে সেই অনুষ্ঠান হবে।
তবে, কারা সমাবর্তন করার ক্ষেত্রে বাগড়া দিচ্ছেন, সেকথা এদিন খোলসা করেননি মন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ২০১৭ সালের পর থেকে এখানে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়নি। যার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা জানান, বিভিন্ন সময়ে উপাচার্য পরিবর্তন এর অন্যতম কারণ হতে পারে। তবে সমাবর্তন অনুষ্ঠান করার জন্য আমরা সবরকম ভাবে প্রস্তুত।
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ২৩ টি কলেজ নিয়ে সোমবার থেকে শুরু হয় আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। এতবড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অতীতে হয়নি বলেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। দু’দিনের এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতার এদিন সূচনা করেন মন্ত্রী ব্রাত্য।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মোট ১৩ টি ইভেন্ট রাখা হয়েছে। প্রত্যেকটি ইভেন্টে পুরুষ এবং মহিলা ক্যাটেগরিতে মোট ১ হাজার ২৬৬ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করছেন।
ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সাংগঠনিক কোন্দল প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল ব্রাত্যর মুখে। তাঁর কথায়, আমাদের জাতি খানিকটা হ্যামলেটের মতো দ্বিধাপ্রবণ, ওথেলোর মতো সন্দেহপ্রবণ এবং ম্যাকবেথের মতো উচ্চাকাঙ্খাপ্রবণ। আমাদের দল সম্পর্কে বলা হয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে। আসলে এটা আমাদের জাতিগত ভাবেই আছে। একটা পুজো হলেও সেখানে আমরা দেখি পাঁচটা কমিটি হয়ে যায়। এতজন মানুষ একসঙ্গে থেকে কাজ করলে মাঝেমধ্যে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু তাঁরা ঐক্যবদ্ধ হলে সব বিভেদ দূর হয়ে যায়। আমাদের সে পথেই চলতে হবে।
এরপর কোভিড অতিমারির উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বার্তা দেন, কোভিড আমাদের শিখিয়েছিল সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে। আমাদের যদি কাছে আসতে হয় সন্দেহ থাকবে, এক ধরনের সতর্কতা থাকবে। কিন্তু একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।