ন’বছর বয়সে আমার হাতে টিটি ব্যাট তুলে দিয়েছিলেন ‘বাই’
বর্তমান | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মান্তু ঘোষ: বাই আমার শুধু কোচ ছিলেন না। বাবা-মায়ের জায়গা নিয়েছিলেন। আমরা খেলোয়াড়রা ভালোবেসে ভারতী ঘোষকে বাই বলেই ডাকতাম। এদিন যখন খবরটা পেলাম, বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে বাই বেঁচে নেই।
গত শুক্রবার নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার সময় ভেবেছিলাম, প্রত্যেকবারের মতো এবারও নার্সিংহোমে গিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ হয়ে ক’দিন বাদেই ফিরে আসবেন। বাইইয়ের মৃত্যুর খবরটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। আমার জীবনে বিরাট শূন্যতা তৈরি হল। ন’বছর বয়সে বাই আমার হাতে টেবিল টেনিসের ব্যাট তুলে দিয়েছিলেন। আমার খেলোয়াড় হওয়ার ক্ষেত্রে তো বটেই জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রেও বাইয়ের আশীর্বাদ, অংশগ্রহণ পুরোপুরি ছিল। বাই না থাকলে আজ এই জায়গায় আসতে পারতাম না। আমাদের সাংসারিক জীবন থেকে শুরু করে চাকরিতে যোগ দেওয়া, কোন চাকরি করব সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে বাই শেষ কথা বলতেন। আর সেই মানুষটির পরামর্শ, আশীর্বাদ পাব না বিশ্বাসই হচ্ছে না। আমার জীবনে বাইয়ের কত স্মৃতি, অবদান।
দেশবন্ধুপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন ভারতী ঘোষ। বাইরের কেউ শুনলেই বলতেন, ও তোমরা দেশবন্ধুপাড়ায় থাক। তাহলে তো টেবিল টেনিস খেল এবং তোমাদের কোচ নিশ্চয়ই ভারতী ঘোষ। বাই নিজেকে পুরোপুরি টেবিল টেনিসের প্রতি উৎসর্গ করে খেলোয়াড়দের মধ্যে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে এই মিথ তৈরি করেছিলেন। বাই রেলে চাকরি করতেন। কিন্তু কোনও দিন নিজের সুখ বা ভালো থাকার কথা ভাবেননি। সংসারও বাঁধেননি। আমরা খেলোয়াড়রাই তাঁর সবকিছু ছিলাম। কোনও খেলোয়াড় কষ্ট রয়েছে শুনলে শান্ত থাকতে পারতেন না বাই। সব রকমভাবে তার পাশে দাঁড়াতেন। সেই মানুষটি মারা গেলে ভালো থাকব কি করে!