মনোরঞ্জন মিশ্র: প্রতিদিনই নিজের অবস্থান পরিবর্তন করছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। রেডিয়োকলারহীন বাঘের সঠিক অবস্থান জানতে হিমশিম খাচ্ছে বনবিভাগ। গত দুদিন ধরে বান্দোয়ান ও মানবাজার ২ নম্বর ব্লক এলাকার বনাঞ্চল এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ঝাড়খণ্ড থেকে পুরুলিয়ায় প্রবেশ করা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটি।
ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে চালানো হচ্ছে নজরদারি। এলাকায় একাধিক বনকর্মীদের টিমকে মোতায়েন করা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ট্রানকুলাইজার টিম। জঙ্গলে একাধিক ট্র্যাপ ক্যামেরা পাতা হলেও নতুন করে বাঘের কোনও ছবি ধরা পড়েনি। এদিকে বন দফতরের পাতা ফাঁদেও পা দেয়নি দক্ষিণরায়। ফলে, সেই বাঘ এখন কোথায়, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। গত তিনদিন আগে ঝাড়খণ্ডের দলমা পাহাড়ের জঙ্গল থেকে বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড় এবং সেখান থেকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বাঘটি। বান্দোয়ান ও বোরো বনাঞ্চল এলাকার রাইকা পাহাড় সংলগ্ন ভাড়ারি পাহাড়, নেকড়া, আঁকরো, বড়কদম, হাতিরামগোড়া সহ একাধিক জঙ্গলে মিলেছে বাঘের পায়ের ছাপ। তারপর থেকেই বাঘকে বাগে আনতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বনবিভাগ।
কদিন আগেই জানা গিয়েছিল, ফের বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ও বোরো বনাঞ্চল এলাকায়। রবিবার সকালে বান্দোয়ান ও বোরো বনাঞ্চল এলাকার ভাড়ারি, নেকড়া, আঁকরো, বড়কদম, হাতিরামগোড়া-সহ একাধিক জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছিল। বাঘের পায়ের ছাপের খবর মিলতেই তৎপর হয়ে উঠেছিল পুরুলিয়ার বনবিভাগ। জঙ্গলে বসানো হয়েছে ট্র্যাপ ক্যামেরা। তড়িঘড়ি মোতায়েন করা হয়েছিল বনকর্মীদের। জঙ্গল-লাগোয়া এলাকায় পাওয়া পায়ের ছাপের সঙ্গে ওই বাঘের পায়ের ছাপের মিল রয়েছে কি না, বনবিভাগের তরফে খতিয়ে দেখাও হচ্ছিল সেটা।
গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে কখনো ঝাড়খণ্ডে, কখনো বাংলার জঙ্গলে চরকি পাক খাচ্ছিল রেডিয়োকলারহীন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটি। এক জেলা থেকে অন্য জেলা, এক জঙ্গল থেকে আরেক জঙ্গলে ঘুরতে-ঘুরতে চলেছে এটি। বাঘকে বাগে আনতে সব চেষ্টাই বৃথা যাচ্ছিল বন বিভাগের । গত কয়েকদিন আগে বান্দোয়ানের জঙ্গল ছেড়ে ঝাড়খন্ডের দলমা পাহাড়ের জঙ্গলে প্রবেশ করেছিল বাঘটি। কয়েকদিন যেতে না যেতেই ফের বান্দোয়ানের জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপের দেখা মিললে আতঙ্ক ছড়াল জঙ্গল-লাগোয়া গ্রামগুলিতে। এদিকে সামনেই দোলযাত্রা। হোলি। বসন্তের আগে-পরে এই এলাকায় বহু পর্যটক যান। এবারেও যাবেন। কিন্তু তার আগে এই ধরনের ঘটনা ঘটায় সর্বস্তরেই আতঙ্কের আবহ।