মায়ের সঙ্গে পরিকল্পনা করে পিসি শাশুড়িকে খুন! আহিরিটোলায় ট্রলিবন্দি দেহ উদ্ধারে নয়া তথ্য
প্রতিদিন | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: এ যেন মেগা ধারাবাহিকের চিত্রনাট্য! পারিবারিক বিবাদের জের রাগের বশে পিসি শাশুড়িকে খুন, তারপর প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ টুকরো করে তা ট্রলিতে ভরে কলকাতায় এনে গঙ্গায় ফেলার চেষ্টা। আহিরিটোলা ঘাটে ট্রলিবন্দি মহিলার দেহ উদ্ধারের ধৃতদের জেরায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য আসছে পুলিশের হাতে। আর তাতে যেন ফুটে উঠছে টিভির পর্দায় দেখা সিরিয়ালের সেসব দৃশ্য! জানা যাচ্ছে, পিসি শাশুড়িকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে মায়ের সঙ্গে মিলে পরিকল্পনা করেছিল মেয়ে। তারা আপাতত পুলিশের হাতে আটক।
সাতসকালে আহিরিটোলা ঘাটে ভারী ট্রলি গঙ্গায় ফেলতে গিয়ে সকলের নজরে পড়ে মা-মেয়ে। ঘাটে উপস্থিত জনতার কৌতূহলী দৃষ্টি আর জিজ্ঞাসার মুখে পড়ে নিজেদের কূট চাল ফাঁস হয়ে যায়। ট্রলিতে কুকুরের দেহ রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে এড়িয়ে যেতে চাইলেও পুলিশে খবর পৌঁছতেই একেবারে দফারফা হয়ে যায় দেহ লোপাটের ব্লু প্রিন্ট। পুলিশ দুই মহিলাকে আটক করে। ট্রলি খুলে দেখা যায়, তাতে মুণ্ডহীন মহিলার তিন টুকরো দেহ। জানা যায়, ধৃতদের নাম ফাল্গুনী ঘোষ ও আরতি ঘোষ। সম্পর্কে ফাল্গুনীর মা আরতি। মৃত মহিলার নাম সুমিতা ঘোষ।
পুলিশের জেরায় প্রথমে ফাল্গুনীর দাবি ছিল, সুমিতা তার পিসি শাশুড়ি এবং তিনি গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাই সেই দেহ না পুড়িয়ে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু তদন্তকারীদের একের পর কড়া কড়া প্রশ্নের মুখে ভেঙে পড়ে তারা। পারিবারিক বিবাদের জেরে পিসি শাশুড়িকে খুনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। জানা গিয়েছে, দুই মহিলার বর্তমান ঠিকানা মধ্যমগ্রামের বীরেশপল্লির ২৩ নম্বর ওয়ার্ড। সেখানেই একটি বাড়িতে ভাড়া নিয়ে প্রায় আড়াই বছর ধরে থাকছিল ফাল্গুনী এবং আরতি। স্থানীয়দের দাবি, হামেশাই রাতে অচেনা লোকজনতে আসতে দেখা যেত। পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক ছিল না বললেই চলে। পাড়ার লোক এ বিষয়ে প্রতিবাদ করাতেও তাদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় প্রতিবেশীদের।
শেষ কয়েকদিন আগে এক মহিলাকে ওই বাড়িতে রাত্রিবেলা আসতে দেখা যায় তাকে দেখে এলাকার কুকুর চেঁচালে আরেক প্রতিবেশী সেই বাড়ি অবদি পৌঁছে দিতে সহায়তা করেন। তারপর থেকে কেউই জানেন না কীভাবে ঘটল এই ঘটনা। আজ সকালে পুলিশ দেখে তাজ্জব হয়ে পড়ে এলাকাবাসী। বীরেশ পল্লি থেকে ভ্যানে করে দোলতলা যান তারা। দোলতলা থেকে গাড়ি করে বারাসতের কাজিপাড়া গিয়ে সেখান থেকে ট্রেনে করে শিয়ালদহ হয়ে আহিরিটোলা ঘাটে পৌঁছয় বলে অনুমান পুলিশের।