পানাগড়ে চন্দননগরের তরুণীর ভয়াবহ মৃত্যুর ঘটনায় প্রায় ৩০ ঘণ্টা পার। এখনও কোনও গ্রেপ্তারির খবর নেই। মঙ্গলবার সকালে কাঁকসা থানায় হাজির হন সিআইডির চার আধিকারিকের একটি দল। থানার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তরুণীর দুমড়ে যাওয়া গাড়ি ও অভিযুক্তদের সাদা গাড়িটিও খতিয়ে দেখে তারা। ছবি, ভিডিয়োও তুলে নেয় ওই গাড়ি দু’টির।
পানাগড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে রবিবার রাতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় চন্দননগরের তরুণী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের। গাড়ির রেষারেষির জেরে দুর্ঘটনায় এই মৃত্যু বলে সোমবারই সাংবাদিক বৈঠকে জানান আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী। দাবি করেন, দুই গাড়ির রেষারেষির অভিযোগই আপাতত তাঁদের কাছে এসেছে। কোনও ইভটিজ়িং বা কটূক্তির অভিযোগ দায়ের হয়নি। অর্থাৎ সোমবার দিনভর সংবাদমাধ্যমে সুতন্দ্রার সহযাত্রী, গাড়ির চালক কটূক্তি, গাড়ি চেজ়িংয়ের কথা বললেও, পুলিশের কাছে তেমন কোনও অভিযোগ আসেনি বলেই সিপি জানিয়েছেন।
তবে সুতন্দ্রার প্রতিবেশী, আত্মীয়রা এ দাবি মানতে নারাজ। সংবাদমাধ্যমে তাঁরা দাবি করেন, কোনও ঘটনা ঘটলেই তা সম্পূর্ণ অন্য ভাবে সামনে আনা হয়। এমনকী তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সুতন্দ্রার প্রতিবেশীরা।
দুর্গাপুরে ময়নাতদন্তের পর সোমবার রাত ১০টা নাগাদ চন্দননগরের নাড়ুয়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় সুতন্দ্রার দেহ। কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয়স্বজনরা। প্রতিবেশীরাও পাড়ার চেনা মেয়েকে এ ভাবে শকটে শুয়ে থাকতে দেখে চোখের জল আটকাতে পারেননি। কেউ কেউ ক্ষোভে সুর চড়িয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘বেলা অবধি অভিযুক্তদের গাড়ির ভিতরে গ্লাস দেখা গিয়েছে। অথচ সেই গ্লাস আরও আগে তদন্তকারীদের তুলে নেওয়ার কথা। না হলে যে কেউ হাত দিলে, তার ফিঙ্গার প্রিন্ট তাতে চলে আসবে।’
অন্য দিকে মঙ্গলবারও সুতন্দ্রার মা দাবি করেন, গাড়ির রেষারেষি নয়, নিরাপত্তার অভাবেই তাঁকে তাঁর মেয়েকে হারাতে হলো। তিনি বলেন, ‘হাইওয়ের উপর কোনও নিরাপত্তা নেই। এ রকম একটা ঘটনা ঘটে গেল। কিন্তু পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারল কি না সেটাই আমরা জানতে পারছি না।’