কলকাতা পুলিশকে মধ্যমগ্রাম যেতে নির্দেশ ভার্মার, কুমোরটুলি কাণ্ডে পুনর্নির্মাণ
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মধ্যমগ্রামের ভাড়া বাড়িতে থাকত মা–মেয়ে। পড়শিরা বলছেন, চরিত্রহীন তাঁরা। তাই তো রাতের অন্ধকারে বাইরে থেকে বাড়িতে পুরুষ মানু্ষ আসত। এই মা–মেয়ের নাম বাসিন্দা ফাল্গুনী ও আরতি ঘোষ। যাঁরা ট্রলিব্যাগে দেহ ভরে কলকাতায় নিয়ে এসে ছিলেন। আর কুমোরটুলির গঙ্গা ঘাটে মৃতদেহ ভাসিয়ে দেওয়াই ছিল মূল লক্ষ্য। যদিও তা বাস্তবায়িত হয়নি। কুমোরটুলি এলাকার স্থানীয় মানুষজন ধরে ফেলায় ভেস্তে যায় পরিকল্পনা। আর বেরিয়ে আসে ট্রলিব্যাগ থেকে মৃতদেহ। এই ঘটনায় কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা আজ জানান, দ্রুত মধ্যমগ্রামে যাবে কলকাতা পুলিশের টিম। আর সেখানে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে।
এই ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গিয়েছে শহরে। এমনকী মধ্যমগ্রামের পড়শিরা পর্যন্ত এটা কল্পনা করতে পারছেন না। ধৃতরা পুলিশের দফায় দফায় জেরায় স্বীকার করে নিয়েছে, তারাই ওই প্রৌঢ়াকে খুন করেছে। তাদের বয়ানে সামান্য অসঙ্গতি রয়েছে। তাই তাদের খুনের মোটিভ নিয়ে এখন তৎপর তদন্তকারীরা। প্রত্যেকটি কথা ক্রস চেক করে দেখা হচ্ছে। আজ সাংবাদিক বৈঠকে কুমোরটুলি কাণ্ড নিয়ে নগরপাল মনোজ ভার্মা বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে নর্থ পোর্ট থানায় খবর আসে। মূল ঘটনা যেহেতু মধ্যমগ্রামে ঘটেছে সেহেতু সেখানকার পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে হয়েছে। খুনের কারণ এখনও অজানা। আমাদের টিম সেখানে যাবে এবং এই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবে।’
প্রায় আড়াই বছর মধ্যমগ্রামে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিল মা–মেয়ে। নানা বাইরের পুরুষ সেখানে রাতের অন্ধকারে আনাগোনা করত বলে দাবি পড়শিদের। এমনকী কাউন্সিলর পর্যন্ত এই দাবি করেছেন। আর লাগাতার পুলিশের জেরায় ফাল্গুনী দাবি করেন, ‘দুদিন আগে খুন করেছিল সে। মৃতদেহের পচা গন্ধ যাতে বাইরে বেরিয়ে না যায় তার জন্য রাসায়নিক স্প্রে করা হয়েছিল। পুলিশ কমিশনারের বক্তব্য, ‘সোমবার বিকেলের দিকে খুনের ঘটনা ঘটেছে। দেহে পচনের লক্ষণ দেখে সেটা বোঝা গিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সবকিছু বলা যাবে না। বারাসত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তদন্ত করা হচ্ছে। দ্রুত সেখানে কলকাতা পুলিশের টিম যাবে।’
এই ঘটনায় অনেকেই এখনও অবাক। কারণ মৃতদেহ সমেত ট্রলিব্যাগ মধ্যমগ্রাম থেকে কলকাতায় ট্রেনে চলে এল। তারপর তা প্রিন্সেপ ঘাট ঘুরে পৌঁছে গেল কুমোরটলি ঘাটে। কিন্তু কেউ টের পেল না? ট্রাফিক পুলিশের সন্দেহ হল না? জবাবে পুলিশ কমিশনারের কথায়, ‘প্রত্যেকটি জায়গায়, প্রত্যেকটি গাড়ি ওভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে এই বিষয়টি মাথায় রাখছে পুলিশ। আগামী দিনে অবশ্যই এই নিয়ে আরও তৎপরতা দেখানো হবে। জোরদার তদন্ত শুরু হয়েছে। আরও নতুন কোনও তথ্য সামনে এলে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হবে।’