• বড় ভাই প্রণয় বাদে দে পরিবারের সকলের হাতেই ছিল ক্ষত চিহ্ন? এর অর্থ কী?
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ট্যাংরার দে পরিবারকে নিয়ে রহস্যের জট কিছুতেই যেন খুলছে না। রোজই সামনে আসছে নতুন প্রশ্ন, নয়া তথ্য। কিন্তু, ধাঁধার উত্তর কিছুতেই মিলছে না। এমনই দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট ঘটনাক্রম বিশ্লেষণ করতে গিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পর থেকে বাড়ির বড় কর্তা প্রণয় দে ও ছোট কর্তা প্রসূন দে-র বয়ান মিলছে না। আর, সেখান থেকেই দ্বন্দ্ব এবং ধন্ধ - দু'টোই বাড়ছে।

    আপাতত তদন্ত যত দূর এগিয়েছে, তাতে কলকাতা পুলিশ একপ্রকার নিশ্চিত যে - ট্যাংরায় একই পরিবারের ওই তিন সদস্যকে খুন করা হয়েছে এবং তাঁদের বাইরের কেউ খুন করতে আসেনি। তাঁদের খুন করেছেন বাড়ির দুই কর্তাই। এমনকী, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা নিজেও সেকথা জানিয়েছেন।

    এদিকে, এই ঘটনায় তিন নারী - বড় গিন্নী সুদেষ্ণা দে, তাঁর ছোট জা রোমি দে এবং বাড়ির নাবালিকা সদস্য প্রিয়ম্বদা দে - এই তিনজনের হাতেই ধারাল অস্ত্রের ক্ষত চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল। এমনকী, প্রণয়ের ছেলে নাবালক প্রতীপ এবং তার কাকা -অর্থাৎ - প্রণয়ের ভাই প্রসূনের হাতেও সেই ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। যদিও, প্রতীপের হাতের ক্ষতচিহ্ন খুব একটা গভীর নয়। এদিকে, একমাত্র প্রণয়ের হাতেই এমন কোনও ক্ষত চিহ্ন পাওয়া যায়নি! কিন্তু, কেন?

    প্রাথমিকভাবে প্রণয় ও প্রতীপ পুলিশকে যে বয়ান দিয়েছেন, তাতে যত দূর পর্যন্ত মিল পাওয়া গিয়েছে, সেই ঘটনাক্রম হল -

    ১০ ফেব্রুয়ারি সপরিবার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন প্রণয় ও প্রসূন।

    ১২ ফেব্রুয়ারি এই ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিজেদের স্ত্রীদের জানান দে ভাইরা এবং দুই জা নাকি তাতে রাজিও হয়ে যান। কিন্তু, বাচ্চারা যদি ভয় পেয়ে যায়, তাই প্রিয়ম্বদা ও প্রতীপকে এই পরিকল্পনা জানানো হয়নি।

    স্থির হয়, প্রণয় প্রতিদিন যে ঘুমের ওষুধ খান, সেই ওষুধ খেয়েই সকলে আত্মহত্যা করবেন। সেই ঘুমের ওষুধ মেশানো হবে পায়েসে। এরপর থেকে বাড়িতে রোজ পায়েস খাওয়া শুরু হয়। এমনকী, সেই পায়ের যাতে রোজ খেতে বাচ্চারা আপত্তি না করে, তাই তাতে তুলসীপাতা প্রভৃতি মিশিয়ে স্বাদে বদলও আনা হয়। শেষমেশ ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়ির সকলে মিলে ঘুমের ওষুধ মেশানো পায়েস খান।

    কিন্তু, ১৮ তারিখ থেকে কী হয়? পুলিশ সূত্রে খবর, ১৮ তারিখ থেকে যে ঘটনাক্রম দুই ভাই তুলে ধরেছেন, তা পরস্পরের সঙ্গে মিলছে না। ইতিমধ্যেই প্রণয়ের ছেলে প্রতীপ দাবি করেছে, তার কাকা প্রসূন নাকি মা, কাকিমা আর দিদির হাত কেটেছেন। তাহলে প্রসূনের হাত একইভাবে কে কাটল? প্রতীপ যা বলছে, তা কি আদৌ সত্যি? নাকি সে ভুল বলছে, বা তাকে আগে থাকতেই ভুল বোঝানো হয়েছে? এমন নয় তো, হাতের শিরা বা গলার নলি প্রসূন নয়, প্রণয় কেটেছেন? কিংবা দুই ভাই মিলে একসঙ্গে এই অপকর্ম করেছেন? কেন প্রণয়ের হাতে কোনও ক্ষত চিহ্ন নেই?

    যদিও প্রাথমিকভাবে প্রণয়ের দাবি, তিনি নাকি প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তাই নিজের হাত কাটতে পারেননি। এর অর্থ কী? তবে, কি তিনি বাকিদের হাত কাটতে পেরেছিলেন?

    এমন অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে কলকাতা পুলিশ। আর এই সমস্ত প্রশ্নের জবাব পেতে দে ভাইয়ের বিস্তারিতভাবে জেরা করা দরকার।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)