মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে স্বাস্থ্যসচিবের বক্তব্যের মিল নেই: হাইকোর্ট
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
কাকদ্বীপে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমিতে জল প্রকল্পের বিরোধিতা করে দায়ের মামলায় ফের একবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। আদালতে পেশ করা তাঁর হলফনামার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের কোনও মিল নেই বলে এদিন উল্লেখ করেন হাইকোর্টের প্রধান বিচাপতি। এই মামলায় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যোদ্ধারের পরিকল্পনা জানতে চেয়ে স্বাস্থ্যসচিবকে ফের হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকে পুরন্দরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। সেজন্য ১৯৬২ সালে স্থানীয় এক ব্যক্তি ৬ বিঘা জমি দান করেন। সেই জমিতে তৈরি হয় ৬ শয্যার স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তার পর আরও কয়েক বিঘা জমি দেন তিনি। তাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শয্যাসংখ্যা বেড়ে হয় ১০। অভিযোগ, সম্প্রতি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পড়ে থাকা জমিতে জল প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে জনস্বাস্থ্য - কারিগরি দফতর। জমিদাতার নাতি জাকির সরকারের এই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর দাবি, তাঁর ঠাকুরদা জমি দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়তে। সেখানে গত কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল দশা। উলটে সেখানে জল প্রকল্প বানাচ্ছে সরকার।
এই মামলায় পুরন্দরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নে সরকারের কী পরিকল্পনা রয়েছে তা জানতে চেয়ে হলফনামা তলব করেন প্রধান বিচারপতি। মামলার গত শুনানিতে হলফনামা দিয়ে স্বাস্থ্যসচিব জানান, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১০টির বেশি শয্যার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মনে করছেন না। স্বাস্থ্যসচিবের এই বক্তব্যকে চরম ভর্ৎসনা করে আদালত। প্রধান বিচারপতি বলেন, কোনও হাসপাতালে ১৯৭৬ সালে ১০টি শয্যা ছিল। ২০২৫ সালে ও ১০টি শয্যা রয়েছে। তার পরেও সেখানে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর দরকার নেই এই যুক্তি শুধুমাত্র নির্বোধই বিশ্বাস করবে।
মঙ্গলবার ফের ছিল মামলাটির শুনানি। সেখানে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘গতকাল মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের জন্য এত কিছু ঘোষণা করেছেন। তার পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মানোন্নয়নে স্বাস্থ্যসচিব যে হলফনামা দিয়েছে তা উদ্বেগ বৃদ্ধি করে। আমরা স্বাস্থ্যসচিবকে এব্যাপারে ফের হলফনামা দিতে বলব। আমরা ইচ্ছা করলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নে নির্দেশ দিতে পারি। কিন্তু আমরা জানি প্রশাসনিক আধিকারিকরা কী করে কাজ করতে হয় জানেন।’ মঙ্গলবার মামলাটির পরবর্তী শুনানি।