মহিলার অভিযোগে ‘ছুটি’তে পাঠানো সুশান্ত ঘোষকে রাজ্য কমিটিতেও ঠাঁই দিল না CPI(M)!
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বাম জমানায় তিনি ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। একটা সময় সিপিআই নেতা হিসাবেও তাঁর দাপট কম ছিল না। কিন্তু, আজ তাঁরই দলীয় সতীর্থদের কেউ কেউ নাকি আড়ালে-আবডালে বলছেন, রাজনীতিতে আর তাঁর কোনও ভবিষ্যৎই রইল না! সূত্রের দাবি অন্তত এমনটাই।
যাঁকে নিয়ে এত কথা, তিনি হলেন সিপিআই-এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটিতেও সুশান্ত ঘোষকে আর জায়গা দেয়নি তাঁর দল। তবে, এমনটা যে ঘটতে পারে বা ঘটতে চলেছে, তেমন ইঙ্গিত নাকি আগেই পাওয়া গিয়েছিল!
ইতিমধ্যেই ৮০ জনের নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণা করেছে সিপিআই। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৭তম রাজ্য সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে এই ৮০ জন সদস্যকে বেছে নেওয়া হয়েছে। যাঁদের মধ্যে মহিলার সংখ্যা ১৪। অতঃপর নবগঠিত রাজ্য কমিটির প্রথম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মহম্মদ সেলিম।
সুশান্ত ঘোষ নামটা উচ্চারণ করলেই আমজনতার মনে ভেসে ওঠে বেনাচাপড়া কঙ্কাল কাণ্ড! যে ঘটনায় নাম জড়ানোর ফলে বেশ কিছু সময় হাজতবাসও করতে হয়েছিল সুশান্তকে। এহেন সুশান্তর বাম রাজনীতিতে উত্থান শুরু হয় প্রায় ২৭ বছর আগে - কেশপুর লাইনের সময়। যদিও তার আগেই তিনি ভোটে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন। কিন্তু, রাজ্যের অন্যান্য এলাকার আমজনতা তাঁকে সেভাবে চিনত না। গত শতাব্দীর ন'য়ের দশকের শেষ থেকে সেই পরিচিতি পেতে শুরু করেন সুশান্ত। এমনকী, প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মন্ত্রিসভাতেও তিনি জায়গা করে নেন।
কঙ্কাল কাণ্ড নিয়ে হইচই, আলোচনা থিতিয়ে যাওয়ার পর, রাজ্যে পালাবদলের পর ক্রমে সুশান্ত ঘোষের প্রসঙ্গও রাজ্য রাজনীতিতে থিতিয়ে যায়। কিন্তু, বছর তিনেক আগে ফের সুশান্ত ঘোষের নাম সংবাদে উঠে আসে।
সেই সময় সুশান্তকে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক পদে নির্বাচিত করে সিপিআই রাজ্য কমিটির সদস্য করা হয়।
কিন্তু, মাস কয়েক আগে কোনও এক মহিলা সুশান্তর বিরুদ্ধে দলীয় নেতৃত্বের কাছে নির্দিষ্ট করে কিছু অভিযোগ জানান। আর, সেই অভিযোগ পাওয়ার পরই সুশান্তকে 'ছুটি'তে পাঠিয়ে দেয় দল। আর, এবার তাঁকে রাজ্য কমিটি থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল। উপরন্তু, সুশান্তকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটিতেও রাখা হয়নি! আর, সেই কারণেই তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে বলে দাবি সূত্রের।
এবারের এই জেলা কমিটিতে নতুন মুখ বলতে রয়েছেন ১১ জন। বাদ পড়েছেন পুরোনো একাধিক সদস্য। সেই তালিকায় রয়েছেন - উত্তরবঙ্গের জীবেশ সরকার, বাঁকুড়ার প্রবীণ নেতা অমিয় পাত্র, রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। নতুনদের মধ্যে যাঁরা রাজ্য কমিটিতে জায়গা করে নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন - হুগলির তরুণ ট্রেড ইউনিয়ন নেতা তীর্থঙ্কর রায়, শান্তনু দে।