সাতসকালে খাস কলকাতায় হাড়হিম করা ঘটনা। মঙ্গলবার সকালে ট্রলি ব্যাগে ভরে মৃতদেহ গঙ্গায় ফেলতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন দুই মহিলা। অভিযুক্ত আরতি ঘোষ এবং ফাল্গুনী ঘোষ সম্পর্কে মা-মেয়ে। ফাল্গুনীর পিসিশাশুড়ি সুস্মিতা ঘোষের মৃতদেহ গঙ্গায় ফেলতে গিয়েই ধরা পড়েন তারা।
‘আয়ার কাজ চাইতে এসে না পেয়ে অকথ্য ভাষার গালিগালাজ করেছিল ওই মহিলা।’ অভিযুক্তদের সম্পর্কে পাড়ায় খোঁজ করতে যেতেই শোনা গেল এমন মন্তব্য। জানা গিয়েছেন, অভিযুক্তরা মধ্যমগ্রামের দক্ষিণ বীরেশ পল্লির ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এলাকাবাসীর দাবি, পাড়ায় কারও সঙ্গেই তেমন মেলামেশা করতেন না মা-মেয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা তমালি চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘সে ভাবে আমরা কেউই ওদের চিনি না। আসলে আমার বাড়িতে আরতি ঘোষ একদিন গিয়েছিলেন আয়ার কাজ চাইতে। আসলে আমার শাশুড়িমা অসুস্থ। তার দেখাশোনা করার জন্য আয়া খুঁজছিলাম আমরা। খবর পেয়ে এসেছিলেন ওই ভদ্রমহিলা। কিন্তু, কথাবার্তা শুনে আমার পছন্দ না হওয়ায় আমি কথা বাড়াইনি। এদিকে পরের দিন বাজার করে ফেরার পথে আমার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করেন ওই মহিলা। ওঁর দাবি ছিল কেন আমি ওঁকে কাজ দিইনি সেটা বলতে হবে। এরকম মানুষকে কে রাখতে চাইবে। আজ তো সব শুনে মনে হচ্ছে ভাগ্যিস রাখিনি।’
পাড়ার অনেকের দাবি, বাড়িতে একাধিক অচেনা লোকের আনাগোনা ছিল। আরতি ঘোষ কী কাজ করতেন তা নিয়ে প্রতিবেশীদের কোনও ধারণা নেই। এলাকাবাসীদের দাবি, তাঁরা শুনেছিলেন আরতি ঘোষের মেয়ে ফাল্গুনীর ডির্ভোস কেস চলছে। বাবার পেনশনের টাকায় সংসার চলত। এছাড়া ফাল্গুনী এক আইনজীবীর কাছে কাজ করত বলে বাড়ি মালিককে জানিয়েছিল।
এ দিন সকালে সংবাদমাধ্যমে আরতি ও ফাল্গুনীর ছবি দেখার পরই চাঞ্চল্য ছড়ায় পাড়ায়। তবে মৃতা সুস্মিতা ঘোষের ব্যাপারে স্থানীয়রা কেউই কিছু বলতে পারেননি। তবে সূত্রের খবর, সোমবার একটি ট্রলি ব্যাগ নিয়ে মধ্যমগ্রামের বাড়িতে মা-মেয়েকে ঢুকতে দেখেছিলেন অনেকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সুস্মিতা ঘোষকে খুনের কথা স্বীকার করেছে ফাল্গুনী ও আরতি। কিন্তু ডির্ভোস কেস চলা সত্ত্বেও ভাইপোর বৌয়ের কাছে কী কারণে এসেছিলেন সুস্মিতা সেই উত্তর এখনও মেলেনি। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।