নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে ফের উঠে এল মহাকুম্ভ প্রসঙ্গ। কুম্ভ মেলার প্রস্তুতির মান নিয়ে এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সম্প্রতি মহাকুম্ভ মেলায় একাধিক দুর্ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পরপর মৃত্যুর ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে এনে ‘মৃত্যুকুম্ভ’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। সেটা নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন বিরোধী দলের নেতারা। আক্রমণ শানিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। এ দিন তারই উত্তর দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার বক্তব্য, ‘আমরা যতটা ক্যাপাসিটি, ততটা কাজ করব। ক্যাপাসিটির বাইরে গিয়ে হাইপ তুলে...। বিয়েবাড়িতে ৪০০ লোককে নিমন্ত্রণ করলে ৫০০ লোকের ব্যবস্থা করতে হয়। আমরা প্ল্যানিংয়ের ব্যাপারে বলেছিলাম। অনেকেই এটা নিয়ে কুকথা-অকথা বলেছেন। তাঁদের প্রতি অনুরোধ, এটা অসত্য। সম্পূর্ণ মিথ্যে।’ তাঁর সংযোজন, ‘আমি কুম্ভ স্নান নিয়ে একটা কথাও বলিনি। তাঁদের প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। প্রতিবার গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান হয়, নিয়ম মেনেই হয়।’ মমতার আগের বক্তব্য নিয়ে বিরোধী শিবির থেকে আক্রমণ করা হলেও, সেই একই সুর ফুটে উঠেছিল উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিষপীঠের শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দের মুখেও। তিনিও মহাকুম্ভের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
এ দিন মমতা তুলনা টেনেছেন গঙ্গাসাগর মেলা ও দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি নিয়ে। তিনি বলেন, ‘গঙ্গাসাগর মেলা হলে ৫-৬ দিন ধরে আমাদের কারও ঘুম হয় না। দুর্গাপুজো যখন হয়, এক একটা জেলাতে দেখেছেন কী রাশ হয়। যতক্ষণ না পর্যন্ত পুজো কার্নিভাল শেষ হয় আমাদের নজরদারি করতে হয়। দুর্ঘটনা হতেই পারে, কিন্তু যদি কারও দোষে হয় কিংবা আমরা যদি ঠিকমতো প্ল্যান না করি তাতে মানুষ ভোগে।’
মহাকুম্ভে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বলতে গিয়ে মমতা টেনে এনেছেন আমরি অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গও। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই আমরিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। মুখ্যমন্ত্রী জানান, সেই সময় রাত জেগে সব ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সবাইকে প্রয়োজনীয় নথি দ্রুত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মহাকুম্ভের ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না বলেই কার্যত অভিযোগ তাঁর। মমতা এ দিন বলেন, ‘যোগী সাহেব যতই গালাগালি দিন, আমার গায়ে ফোস্কা পড়বে না। আপনারা পোস্টমর্টেম সার্টিফিকেট দেননি। আমরা আমাদের রাজ্যে যা এসেছে, সেগুলি করেছি। বাকি রাজ্যে কী হয়েছে জানি না।’ মহাকুম্ভে দুর্ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের সঙ্গেই একাধিক পথ দুর্ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদেরও ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন মমতা। সেই ক্ষতিপূরণও দ্রুত দিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তিনি। মমতা বলেন, ‘আপনারা যখন ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন, সেটা দিয়ে দেওয়া উচিত এক্ষুণি।’