দু’জনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে ফেব্রুয়ারিতে। কিশোরের বয়স ১৭। কিশোরী ১৬ বছর। পরীক্ষা শেষ করে তারা ঠিক করে এ বার বিয়ে করবে। প্রেমকে ‘পরিণতি’ দিতে বাড়ি থেকে পালিয়ে কিশোরের বাড়ি চলে গিয়েছিল ‘প্রেমিকা’। পরিবারের অমতেই বিয়ের চেষ্টা করে দু’জন। বিস্তর চেষ্টার পর নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরে।
পুলিশ সূত্রের খবর, পৃথক গ্রামে বসবাস করলেও একই ক্লাসে পড়াশোনার সূত্রে বন্ধুত্ব হয় দুই কিশোর-কিশোরীর। এ বারেই তারা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। তবে পরীক্ষা শেষ করেই ওই কিশোর-কিশোরী বিয়ে সেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। বিয়ের জন্য সোমবার নিজের বাড়ি ছেড়ে ‘প্রেমিকের’ বাড়ি চলে গিয়েছিল ১৬ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এই বয়সে তারা বিয়ে করবে শুনে, স্বাভাবিক ভাবেই বাধা দেয় কিশোরের পরিবার। কিন্তু মেয়েটি বিয়ে না-করে বাড়ি ফিরতে নারাজ। তখন বাধ্য হয়ে তাকে বাড়িতে রাখে ‘প্রেমিক’-এর পরিবার।
অন্য দিকে, মেয়ে ‘নিখোঁজ’ বলে দাবি করে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিল কিশোরীর পরিবার। খোঁজখবর করে মঙ্গলবার দুপুরে বিষ্ণুপুরের জয়েন্ট বিডিও-সহ বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ উপস্থিত হয় নাবালকের বাড়িতে। শুরু হয় অ-প্রাপ্তবয়স্ক প্রেমিক-প্রেমিকাকে বোঝানোর পর্ব। অনেক চেষ্টার পরে দু’জনকে মনোবিদের কাছে পরামর্শ নেওয়ার জন্য পাঠানোর পদক্ষেপ করে প্রশাসন।
বিষ্ণুপুরের জয়েন্ট বিডিও সুপ্রকাশ মাইতি বলেন, ‘‘বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে আমরা পুলিশের সহযোগিতায় অ-প্রাপ্তবয়স্ক ওই যুগলকে উদ্ধার করেছি। ওই যুগল একে অপরকে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছিল। আপাতত তাদের ‘কাউন্সেলিং’-এর জন্য সমাজ কল্যাণ দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’ পুরো ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার তথা স্থানীয় সমাজসেবী দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রেমিকার বাবা-মা বিষয়টি আমাকে জানানোর পর সঙ্গে সঙ্গে আমি বিষয়টি পুলিশ এবং প্রশাসনের নজরে আনি। তারা দ্রুততার সঙ্গে অ-প্রাপ্তবয়স্ক ওই যুগলের বিয়ে আটকেছে। সম্ভব হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দারাও যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন।’’