রাজ্যের জঙ্গলমহলে ফের বাঘের আতঙ্ক। কিছু দিন আগেই বাঘিনী জিনাতের জন্য আতঙ্কে কাঁটা হয়ে থেকেছেন একাধিক জেলার বাসিন্দারা। তার পরেই কখনও ঝাড়খন্ড, কখনও পুরুলিয়া, কখনও আবার ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে পাওয়া যাচ্ছে পুরুষ বাঘের পায়ের ছাপ। কয়েকদিন আগে পুরুলিয়াতে দেখা গিয়েছিল বাঘের পায়ের ছাপ। এ বার এক অজানা জন্তুর পায়ের ছাপের দেখা মিলল বেলপাহাড়ির ধরমপুর গ্রামে আলুর জমিতে। গ্রামবাসীদের দাবি, এটি বাঘেরই পায়ের ছাপ। যদিও বনদপ্তর স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি। পরীক্ষার পরে তবেই সেটি কোন প্রাণীর পায়ের ছাপ তা স্পষ্ট হবে বলে জানানো হয়েছে। এখন এই পায়ের ছাপকে কেন্দ্র করেই নতুন করে বাঘের আতঙ্ক দানা বেঁধেছে বেলপাহাড়ির বাঁশপাহাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ধরমপুর ও পাশের নানা গ্রামে।
সোমবার সকালে ধরমপুর গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় মুড়া তাঁর আলুর ক্ষেতে যান। সেখানেই তাঁর নজরে পড়ে কোনও প্রাণীর পায়ের ছাপ। বিষয়টি জানানো হয় বনদপ্তরে। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে যান বনদপ্তরের শীর্ষ অধিকর্তা এসিএফ স্বর্ণদীপ্ত রক্ষিত। বনদপ্তরের বিশেষ দল পায়ের ছাপগুলি মেপে দেখেন। প্লাস্টার অফ প্যারিসের মাধ্যমে পায়ের ছাপের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এসিএফ স্বর্ণদীপ্ত রক্ষিত বলেন, ‘পায়ের ছাপটি বাঘের না অন্য কোনও জন্তুর তা পরীক্ষা ছাড়া বলা যাবে না। দেখে যা মনে হচ্ছে জন্তুটি ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে গিয়েছে।’
কয়েকদিন আগেই পুরুলিয়াতে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে। ওডিশার সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভ থেকে বাঘিনী জিনাত ঝাড়খন্ড হয়ে ঝাড়গ্রাম জেলার কটুচুয়া, কাঁকড়াঝোড়ের পথ ধরে চলে গিয়েছিল পুরুলিয়ায়। তারপর বাঁকুড়ার রানিবাঁধের কাছে ধরা পড়ে জিনাত। জিনাতকে নিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পরেই নতুন করে বাঘের আতঙ্ক চাউর হয় বেলপাহাড়িতে। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে বেলপাহাড়ির সিঙ্গাডোবায় ছাগল চড়াতে গিয়ে বাঘ দেখেছিলেন বলে দাবি করেন এক মহিলা। তাঁর একটি ছাগলও বাঘ শিকার করেছিল বলে দাবি করেছিলেন তিনি। কয়েকদিন পরে সেই বাঘটি পুরুলিয়ায় চলে যায় বলে জানা যায়। প্রাণী বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, স্ত্রী বাঘের ফেরোমনের গন্ধে পুরুষ বাঘ স্ত্রী বাঘের ঠিকানায় পৌঁছে যায়। যেহেতু জিনাত এই এলাকায় বেশ কিছু দিন কাটিয়েছে সেই কারণে জিনাতের খোঁজে কোনও পুরুষ বাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা।