• সাংগঠনিক জেলা ভাগের ভাবনায় এগোচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেস, ছাড় অধীরের মুর্শিদাবাদকে
    প্রতিদিন | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাংগঠনিক রদবদলের প্রস্তুতিতে জেলা সফর করে পরপর কর্মিসভা চলছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের। এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে সংগঠনের একটা বড় অংশে রাজ‌্যস্তর থেকে জেলা, মূল সংগঠন থেকে শাখা পর্যন্ত সর্বত্র রদবদলের ভাবনা রয়েছে। যার প্রাথমিক পর্বেই রয়েছে সাংগঠনিক জেলা ভাগের প্রস্তাব। তবে সেক্ষেত্রে আপাতত অধীর চৌধুরির জেলা মুর্শিদাবাদকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

    দলের একাংশের বক্তব‌্য, মুর্শিদাবাদ জেলা নিয়ে ‘ধীরে চলো’ নীতি নেওয়া হয়েছে। কারণ, ধারে-ভারে সব দিক থেকেই পাঁচ বারের সাংসদ হিসাবে ওয়ার্কিং কমিটির সদস‌্য অধীরের ওজন বাকিদের তুলনায় বেশি। তাতে দলের নানা বিষয়ে এখনও বর্তমান সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের সঙ্গে অধীরের বিশেষ সখ‌্যতার প্রমাণ তেমন মেলেনি। ফলে প্রদেশ সভাপতি হিসাবে ব‌্যর্থ হলেও ‘ওজনদার’ অধীরের জেলাকে এক্ষেত্রে রদবদলের ভাবনা থেকে আপাতত দূরেই রাখছে প্রদেশ নেতৃত্ব। দলে এক ব‌্যক্তি-এক পদ নীতি অনেকদিন আগেই প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। তা নিয়ে ভাবনার পাশাপাশি প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, জেলায় রাজনৈতিক কর্মসূচি আরও বাড়াতে সাংগঠনিক প্রয়োজনে তাদের ভাগ করা হবে। শুরুতেই সব জেলা ভাগ না করে, ধীরে ধীরে সেই প্রক্রিয়ায় যেতে চায় প্রদেশ নেতৃত্ব। আয়তনের দিক থেকে উত্তর ২৪ পরগনা ও মুর্শিদাবাদ প্রায় সমান। রাজ্যের সব থেকে বড় দুই জেলার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনাকে ইতিমধ্যে দুই ভাগে ভাগ করা রয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ এমন একাধিক জেলাকে সাংগঠনিকভাবে ইতিপূর্বেই দুই ভাগে ভাগ করা। এর পর হাওড়া, কোচবিহার, হুগলি-সহ আরও একাধিক জেলাকে ভাগ করার কথা চর্চায় রয়েছে। প্রদেশ নেতৃত্বের মতে, এতে কর্মীদের আরও চাঙ্গা করা যাবে।

    ইতিমধ্যে কিছু কর্মিসভা সেরে ফেলেছেন শুভঙ্কর। তাতে নানা জেলায় একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। প্রত্যেক গোষ্ঠীকেই দক্ষতা অনুযায়ী সমান গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। সাংগঠনিক জেলা ভাগের প্রয়োজনীয়তার পিছনে সেটিও একটি বড় কারণ। এক রাজ‌্য নেতার কথায়, “জেলার সাংগঠনিক কর্মসূচিতে প্রত্যেকের গুরুত্ব রয়েছে। আবার প্রত্যেকেরই বিভিন্ন সময়ে প্রদেশ নেতৃত্বের প্রতি আনুগত‌্য ছিল বা আছে। জেলার সাংগঠনিক ভাগের ক্ষেত্রে সবটাই নেতৃত্বের ভাবনায় রয়েছে। এই আলোচনায় মুর্শিদাবাদের নাম আসতেই ‘ধীরে চলো’ নীতি নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে হাইকমান্ডের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। সূত্রের খবর, সাংগঠনিক রদবদলের চর্চা সামনে আসতেই মুর্শিদাবাদ জেলাকে যেন সেই চর্চা থেকে বাদ রাখা হয়, হাইকমান্ডকে সেই বার্তা ইঙ্গিতে পাঠিয়েছিলেন অধীর। সে খবর প্রদেশ নেতৃত্বেরও জানা।

    অন‌্যদিকে, সংগঠনে জেলা নেতৃত্বে বয়সের উর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার দিকে হাঁটতে পারে প্রদেশ নেতৃত্ব। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে জেলা সভাপতিদের ক্ষেত্রে ৭০-এর কোঠায় বাঁধা হতে পারে বয়সসীমা। এই মুহূর্তে পাঁচ-ছটি জেলায় এমন সভাপতি আছেন, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে জেলা নেতৃত্বের পদে রয়েছেন। অনেকে নিজে থেকে সরেও যেতে চেয়েছেন বয়সের কারণে। সেই কারণেই জেলা নেতৃত্বের ক্ষেত্রে বয়সসীমা বাঁধার ভাবনা রয়েছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)